নিজস্ব সংবাদদাতা: “দু’দিন আমার ছেলে লাঞ্চ কিংবা ডিনার করতে যায়নি অথচ হল কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিলনা ছেলেটা কোথায় গেছে?” “আমার ছেলে যে এক হোস্টেল থেকে অন্য হোস্টেলে গিয়েছে কেউ জনলনা?” নিজের ছেলের মৃতদেহ নিতে এসে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাঙ্গনে এভাবেই আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রশ্ন তুললেন শুক্রবার সকালে লালা লাজপত রায় ছাত্র আবাসন থেকে উদ্ধার হওয়া মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ( Mechanical Engineering Department of IIT Kharagpur) থার্ড ইয়ারের ছাত্র ফায়জন আহমদের বাবা সালিম আহমদ। এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ” আমি একজন পুত্র হারা বাবা মমতা দিদির কাছে ইনসাফ চাইছি।”
সালিম জানান, ” গত বুধবার আমার ছেলেকে ফোন করেছিলাম কিন্তু ফোন ধরেনি। আমি ভেবেছিলাম ছেলে ব্যস্ত রয়েছে পড়াশুনা নিয়ে। বৃহস্পতিবার ফের কয়েক দফায় ফোন করি ছেলেকে। এবার সুইচ অফ পাই। শুক্রবার বেলা ১০.৪৫ নাগাদ আইআইটি থেকে ফোন করে জানানো ছেলের এরকম অবস্থা আমরা যেন দ্রুত চলে আসি। তখন আমি ঘরে ছিলাম না। বাড়ি ফিরতেই আমার স্ত্রী আমাকে বিষয়টি জানান। আমি এবার কর্তৃপক্ষকে ফোন করি কিন্তু তাঁরা বারবার খালি আমাকে বলেন, আপনি আসলে কথা হবে। এই বলে বারবার ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য শুক্রবার বেলায় লালা লাজপত রায় ছাত্রাবাসের একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয় ফয়জানের পচন ধরা দেহ। দরজা ভেতর ভেজানো ছিল বলেই পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। কোনও দুর্ঘটনা, অসুস্থতা বা অন্য কারনে মৃত্যু হয়েছে ফয়জানের। তবে কী কারনে মৃত্যু তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে। ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে গতকালই পুলিশের তরফে মৃতদেহ খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের পরিবর্তে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে একজন ফরনেসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা যায়।
এদিকে আইআইটি খড়গপুরের তরফে গাড়ি পাঠিয়ে ফয়জনের বাবা মা ও আত্মীয়দের কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আনার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁরা আসামের তিনসুকিয়া থেকে আজই এসে পৌঁছান। আইআইটি কর্তৃপক্ষর তরফে বলা হয়েছে গোটা বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যা বলার পুলিশই বলবে। এদিন সন্ধ্যা অবধি থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি ফয়জানের পরিবার।