নিজস্ব সংবাদদাতা: সাড়ে ১৯ ঘন্টা পেরিয়ে অবশেষে নিজে নিজেই ভেসে উঠল রেলকর্মী তাপস দাসের দেহ। বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৫৫ নাগাদ কাঁসাই রেল সেতুর যে অংশ থেকে তাপস নিচে পড়ে যান তার ঠিক দক্ষিণ ঘেঁষেই দেহটি ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ভাসতে দেখা যায়। এরপরই দেহটি তুলে আনেন NDRF কর্মীরা।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/07/Screenshot_20220708-122419_WhatsAppBusiness.jpg)
বৃহস্পতিবার প্রায় ৮ ঘন্টা নদীতে তল্লাশি চালানোর পর রাত ১০টা নাগাদ অভিযান সেদিনের মত তল্লাশি বন্ধের ঘোষণা করে জাতীয় উদ্ধারকারী দল NDRF। প্রায় ৩৫ ফুট উঁচু থেকে নদীর জলে পড়ার পর তাপসের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। কিন্ত দেহটি না মেলায় উৎকণ্ঠা বাড়ছিল। শুক্রবার সকালে নতুন করে অভিযান শুরু করার আগেই দেহটি উদ্ধার হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন অনেকেই।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে রেলসেতুটি গুড়গুড়িপাল থানার অংশ হলেও দেহটি যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে সেই এলাকাটি খড়গপুর গ্রামীণ থানার অংশ হওয়ায় দেহটি উদ্ধার করেছে গ্রামীণ থানার সাদাতপুর ফাঁড়ি। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ সেটি খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। দুপুর ২টা নাগাদ ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হয়ে সাড়ে ৩টা নাগাদ তাপস দাসের মরদেহ তাঁর খরিদার বাড়িতে পৌঁছাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে খরিদা বিলাসমোড় এলাকায় মানুষের মধ্যে তীব্র শোকের আবহাওয়া বিরাজ করছে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/07/Screenshot_20220708-122331_WhatsAppBusiness.jpg)
বৃহস্পতিবার রাত অবধি কোথাও একটা ক্ষীণ আশা নিয়ে বিছানায় গিয়েছিল স্থানীয় মানুষজন, হয়ত কোনও মিরাক্যাল কিছু হয়ে যেতে পারে, ফিরে আসতে পারেন তাপস দাস। কিন্তু শুক্রবার ভোর বেলাতেই শোকের খবরটা ছড়িয়ে পড়েছে খড়গপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড জুড়েই, ‘তাপসের দেহ পাওয়া গেছে, তাপস আর নেই।’ চাপা শোকে ভরে আছে খরিদা।
স্থানীয় যুবক দীপক দাস জানিয়েছেন, ” অসম্ভব ভালো মানুষ ছিলেন তাপস-দা। সর্বদাই হাসিখুশি, মানুষের বিপদ আপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। আমরাও কখনও যদি কোনও প্রয়োজনে, কাউকে আর্থিক সাহায্য করার জন্য অর্থ সংগ্ৰহ করতে যেতাম তো উনি সাধ্যমত সাহায্য করেছেন। না বলতেন না কোনও দিনই। ভীষন খারাপ লাগছে। গতকাল সারাদিন আমি এবং আমার বন্ধুরা, পাড়ার আরও কয়েকজন কাঁসাই নদীর পাড়েই ছিলাম। আশা ছিল হয়ত উনি কোনও ভাবে বেঁচে ফিরবেন কিন্তু ভোর বেলাতেই জানতে পারলাম দেহ পাওয়া গেছে তাঁর।” ১৯নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃনমূল সভাপতি বরুণ ঘোষ বলেছেন, ” কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তাপস দাসের। আমরা রেল কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদন জানাবো সরকারের নিয়ম মেনে যেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পরিবারের হাতে দ্রুত তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি পরিবারটা যেন ভেসে না যায় তাই তাপস দাসের স্ত্রীকেও রেলে চাকরি দেওয়া হয়। উল্লেখ্য স্ত্রী ও দুই নাবালিকা ছাড়াও তাপস দাসের বিধবা মা রয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়েই গোটা পাড়া উপচে পড়েছে তাপস দাসের বাড়িতে।