নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী ২২ নভম্বরের মধ্যে হলদিয়া আদলতে শ্যামল আদককে আত্মসমর্পন করার নির্দেশ দিলেন হলদিয়ার মুখ্য দায়রা আদালত। অক্টোবরের গোড়াতেই দুর্নীতি, স্বজন পোষন ইত্যাদি একাধিক মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন এই আদালত। সেই পরোয়ানা নিয়ে দিল্লি অবধি ধাওয়া করেও হলদিয়ার এই প্রাক্তন পুর প্রধানকে জালে ফেলতে পারেনি পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ। খুব স্বাভবিক ভাবেই কেন সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা হয়নি পুলিশকে তার জবাবদিহি করতে হয় আদালতে। পুলিশের সেই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হওয়ার পরই সম্ভবত এই হুলিয়া জারি করেছে আদালত।
পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা আদালতকে জানিয়েছি যে, আসামী কলকাতা ছেড়ে দিল্লির বিমান ধরেছে জানার পরই তা দিল্লি পুলিশকে অবগত করা হয়। অথচ আমরা দেখতে পাই পুলিশেরই এসকর্টে আসামী বিমান বন্দর ছেড়ে বেরিয়ে যায়। আমরা আদালতকে এও জানিয়েছি আসামী এক প্রভবশালী ব্যাক্তির আবাসনে আছে জানতে পেরে আমরা দিল্লি পুলিশের সহযোগিতা প্রার্থনা করি সেখানে রেইড করার জন্য কিন্তু সেই সহযোগিতা আমাদের দেওয়া হায়নি। ভিন রাজ্যে গিয়ে সেই রাজ্যের পুলিশের সাহায্য ছাড়া কোনও তল্লাশি করলে আইন শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে বলে আমরা সেই তল্লাশি চালাতে পারছিনা। আমাদের একাধিক আধিকারিক আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য দিল্লিতে বসে রয়েছেন অথচ কিছু করা যাচ্ছেনা। আমার মনে হয় এরপরই মহামান্য আদালত এই হুলিয়া জারি করেছেন। আমরা আদালতের নির্দেশ মত হলদিয়া এবং কলকাতার বিভিন্ন স্থানে ওই নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছি।”
জানা গেছে সোমবার হলদিয়া ও কলকাতার রিজেন্ট পার্কে শ্যামলের বাড়ি, তাঁর ঠিকাদারি সংস্থার কার্যালয়,হলদিয়া পুরসভা, হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের বাইরে এবং শিল্প শহরের জনবহুল বিভিন্ন জায়গায় আদালতের জারি করা ওই হুলিয়ার প্রতিলিপি সেঁটে দেয় পুলিশ। ভারতীয় দন্ডবিধি অনুযায়ী এই হুলিয়া জারি করার পরও যদি আসামী নিজেকে অন্তরীণ রাখেন বা আত্মসমর্পন না করেন তবে তাঁকে যখন খুশি, যেখানে খুশি গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারেন আদালত। প্রয়োজনে আসামী উপস্থিত আছেন এমন কোনও বাড়ির দরজা এমন কী দেওয়াল ভেঙে আসামীকে তুলে আনার ক্ষমতা দেওয়া হয় পুলিশকে। এই হুলিয়া অগ্রাহ্য করলে দেশের অন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্থানীয় পুলিশকে গ্রেফতারিতে সহযোগিতা করতে বাধ্য করা যায়। আসামীকে ‘ দাগী ‘ বলে দেগে দিতে পারে আদালত। তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা যায়, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া যায়, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যায়।”
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই হুলিয়া জারির ফলে আদকের অবস্থান আরও কঠিন হল। অন্য কোনও আদালতের দ্বারস্থ হলেও এই আদালতে সশরীরে হাজির হতেই হবে তাঁকে। তাছাড়া যদি ২২ নভেম্বরের মধ্যে তিনি আদালতে হাজির না হন তবে আদলতের পরবর্তী নির্দেশ নিয়ে আরও বড়সড় অভিযানের পথ খুলে গেল আমাদের।”