নিজস্ব সংবাদদাতা: শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে বাবাকে বন্দুকের মুখে দাঁড় করিয়ে তিনতলার ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে খুন করা হয়েছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা আনিস খানকে। ২৮ বছরের ওই ছাত্রনেতার অপরাধ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি হস্তান্তরের বিরোধিতা করেছিলেন।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220220-WA0015.jpg)
শনিবার সেই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে পুঞ্জীভূত হচ্ছে ক্রোধ, ক্ষোভ, বিক্ষোভ। রবিবারও তার অন্যথা হয়নি। এদিন সারা রাজ্যের সঙ্গে উত্তাল হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাও। জেলা সদর মেদিনীপুর সহ জেলার একাধিক শহর ও গ্রামীণ এলাকায় এদিন তীব্র ধিক্কারে ফেটে পড়তে দেখা গেছে ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলিকে।
জানা গেছে জেলার ১২টি স্থানে মিছিল সহ পথ অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ অবস্থানে সামিল হলেন এস এফ আই এবং ডি ওয়াই এফ আই। বিক্ষোভ থেকে খুনী ও খুনীদের পৃষ্ঠপোষক রক্ত খেকো সরকার কে ধিক্কার জানায় ছাত্র যুবরা। শিক্ষার বেসরকারি করণ, সিলেবাসে মেরুকরণের রাজনীতি সহ বিভাজন এবং রাজ্য সরকারের হঠকারী ও ভ্রান্ত পদক্ষেপ গুলির প্রতিবাদী ছাত্র নেতাকে শাসক দলের হুমকি সহ খুন করার চক্রান্ত এমন অভিযোগ থানায়
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/02/Screenshot_20220220-211954_WhatsAppBusiness.jpg)
লিপিবদ্ধ হওয়ার পরও খুন হতে হলো পুলিশের পোশাক পরা সশস্ত্র দূষ্কৃতি বাহিনীর হাতে। মধ্যরাতে আগ্নেয় অস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়ীর লোকজনদের আটক করে ঘরের তিনতলা ছাদে মারধর করে সেখান থেকে ছুঁড়ে ফেলে নৃশংস হত্যার ঘটনা বিজেপি শাসিত রাজ্যের ঘটে যাওয়া ঘটনাকেও হার মানিয়েছে এমন বক্তব্য তুলে অবরোধ স্থলে বিক্ষোভ সভায় ছাত্র যুব সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব বৃন্দ।
এই বিক্ষোভ সমাবেশ গুলিতে অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে সরকারের পরোক্ষ অথবা প্রত্যক্ষ মদতে এবং পুলিশি নৃশংসতায়, শাসকদলের পৃষ্ঠপোষকতায় যেমন এর আগে খুন হয়েছে সুদীপ্ত গুপ্ত, মইদুল ইসলামের মত ছাত্রনেতারা তেমনই এবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় খুন হয়েছেন আনিস খান। নৃশংস হত্যার ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে এবং দোষীদের বিচার চেয়ে জেলা শহর মেদিনীপুর, মহকুমা শহর খড়গপুর, ঘাটাল এবং দাসপুর, চন্দ্রকোনারোড, কলোড়া, সোনাখালি, গোয়ালতোড়, ক্ষীরপাই, সবং, পিংলা, জলচক এমন স্থানগুলিতে বিক্ষোভ মিছিল সহ পথ অবরোধ ও প্রতিবাদ সভা হয়।
এদিন নজরকাড়া বিক্ষোভ হয়েছে মেদিনীপুর শহরে। শহরের গান্ধী মূর্তির সংলগ্ন এলাকা, কালেক্টরেট মোড়, কেরানীতলা, বটতলা সহ রিংরোড জুড়ে ধিক্কার মিছিল পরিক্রমা করেছে। মিছিল শেষে মেদিনীপুর কলেজ মোড়ে একটি ধিক্কার সভা সহ হয়েছে অবরোধও। গ্রামীণ এলাকাগুলির মধ্যে একটি বড়সড় বিক্ষোভ সংগঠিত হতে দেখা গেছে পিংলা থানার জলচক এলাকায়। ব্যাপক সংখ্যক ছাত্রযুব সহ সমাজের অন্যান্য অংশের মানুষেরাও সামিল হয়েছিলেন ওই বিক্ষোভে। একটি ধিক্কার মিছিল এদিন জলচক বাজার পরিক্রমা করার পর বিক্ষোভ সমাবেশও করে। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয়
বাম যুব সংগঠনের নেতা কল্যাণ রায়, সুরঞ্জন চক্রবর্ত্তী, ছাত্র নেতা সন্তু ভৌমিক, স্থানীয় সিপিএম নেতা জগন্নাথ ঘোড়াই সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মানুষজন।