নিজস্ব সংবাদদাতা: কী ভাবে মারা গেলেন আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kharagpur) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সতীনাথ ভট্টাচার্য তাই নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে যা কাটতে পারে শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর। পুলিশ জানিয়েছে দেহটি মেঝেতে পড়েছিল এবং পচে গলে প্রায় কঙ্কাল অবস্থা হওয়ায় তা থেকে প্রাথমিক কোনও অনুমান করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। একমাত্র ময়নাতদন্ত থেকেই পরিস্কার ধারনা পাওয়া যাবে মৃত্যুর ধরন সম্পর্কে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরই অধ্যাপক সতীনাথ ভট্টাচার্যর নিকট আত্মীয়দের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। কারন আইআইটি ক্যাম্পাসের এ টাইপ আবাসনে অবিবাহিত ওই ৫২ বছরের অধ্যাপক একাই থাকতেন।
দু’ মাস ধরে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা আইআইটি খড়গপুরের ওই অধ্যাপকের।জানত আইআইটি কর্তৃপক্ষও কিন্তু জানায়নি পুলিশকে। জানানোর প্রয়োজন মনে করল ২ মাস পরে আর জানানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দেহ উদ্ধার করল পুলিশ! বৃহস্পতিবার আইআইটি খড়গপুর ক্যাম্পাসের নিজের কোয়ার্টারেই থেকে খড়গপুর আইআইটির এক অধ্যাপকের পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষ ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুলিশ অধ্যাপকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে ওই অবিবাহিত অধ্যাপক একাই থাকতেন ‘এ’ টাইপ কোয়ার্টারে। গত দুই মাস ধরে এই অধ্যাপকের কোনও খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভাগেও যাওয়া আসা বন্ধ ছিল। এমনকি লকডাউন পরবর্তী সময়ে বিভাগ চালু হয়ে যাওয়ার পরও এই অধ্যাপককে দেখা যায় নি। কিন্তু ব্যাপারটি নিয়ে পুলিশে যেতে হয়ত ইগোতে বাধে আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষের। তারা নিজেদের মত করে অধ্যাপকের খোঁজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও ভাবেই ওই অধ্যাপকের হদিস না মেলায় টনক নড়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষের। বাধ্য হয়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়। খবর পাওয়ার পরই পুলিশ অভিযান শুরু করে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ হাজির হয় আইআইটি নির্জনতম আবাসন এলাকা ‘এ’ টাইপে। প্রায় এক একর বিস্তৃত জায়গার ওপর ‘এ’ টাইপ কোয়ার্টার। একেকটি কোয়ার্টার থেকে অন্য কোয়ার্টারটির দূরত্ব যথেষ্ট বেশি। তারমধ্যে বেশিরভাগই অধ্যাপক অধ্যাপিকারা আবার এই সমস্ত আবাসন ছেড়ে আইআইটির নব নির্মিত আধুনিক সুবিধাযুক্ত ফ্ল্যাট গুলিতে উঠে যাওয়ায় কার্যত শুনশান এ টাইপ এলাকা। ফলে আশেপাশের কেউ জানতেও পারেননি অধ্যাপকের মৃত্যুর কথা। অনেক ডাকাডাকির পরেও কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। এরপরই পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে খবর দিয়ে আনা হয়। তারপর ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে কোয়ার্টারের দরজা ভাঙা হয়। তখনই দেখা যায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে অধ্যাপকের কঙ্কালসার মৃতদেহটি।
এই ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়গপুর) রানা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘খড়গপুর আইআইটির এক অধ্যাপকের পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁর কোয়ার্টার থেকে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এদিকে টানা ২মাস কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকা স্বত্ত্বেও আইআইটি কর্তৃপক্ষ কেন আগেই বিষয়টি খতিয়ে দেখেননি তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা আত্মহত্যা নাকি অসুস্থতা জনিত মৃত্যু তার উত্তর পাওয়া যাবে ময়নাতদন্তের পরই।