Saturday, July 27, 2024

Panskura: পূর্ব মেদিনীপুরে ৫ দিনের মাথায় ফের স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যা ! গ্রেফতার অভিযুক্তকে থানায় নিতেই অসুস্থ, তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়েও মৃত স্বামী

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা : স্ত্রীকে খুন করে বাড়িতেই বসে ছিলেন স্বামী। পালানোর নামগন্ধও নেই। উপায় নেই নির্বিকার ভাবেই ধরা দেন পুলিশের কাছে। স্বীকারও করে নেন খুনের কথা। স্বাভাবিক ভাবেই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় খুনে অভিযুক্ত স্বামীকে। থানার গারদে থাকার সময় হঠাৎ-ই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের নজরে পড়ে অভিযুক্ত প্রথমে অস্থির হয়ে পড়ছিল কিন্তু ক্রমশঃ যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। কি হয়েছে বোঝার চেষ্টা করতে গিয়ে জানা যায় কীটনাশক পান করেছেন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। কিছুক্ষণ পর স্বামীরও মৃত্যু হয় হাসপাতালে। শনিবার এমনই কান্ড পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া থানা এলাকায়।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে পাঁশকুড়া থানার হাউরের পুরুল গ্রামে । মৃত ওই দম্পতি হলেন নারায়ণ জানা(৪৯) ও চন্দনা জানা (৩৮)। স্থানীয় সূত্র মারফৎ পুলিশ জানতে পারেন স্ত্রী চন্দনার মাথায় লোহার বাটখারা দিয়ে আঘাত করে খুন করেছেন নারায়ন। খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশ। মৃতদেহটি উদ্ধারের পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত বাটখারাটিও উদ্ধার করে পুলিশ। তখন ছেলে মেয়েদের সাথে ঘরেই ছিলেন নারায়ন। জিজ্ঞাসাবাদ করার পর নারায়ন খুনের কথা স্বীকার করলে তাঁকেও থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেই সময় আশ্চর্য রকম নির্বিকার ছিলেন নারায়ন। কিন্তু থানায় কিছুক্ষণ থাকার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন নারায়ন। পেটে যন্ত্রণার পাশাপাশি বমির উদ্রেক হয়, মুখ দিয়ে গাঁজলা ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিছু একটা সমস্যা আছে সন্দেহ করে পুলিশ নারায়নকে কারন জিজ্ঞাসা করলে নারায়ন জানান তিনি কীটনাশক পান করেছেন। এরপরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশের ধারণা তীব্র পারিবারিক অশান্তির কারণেই এই খুন ও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নারায়ন জানা মাদকাসক্ত ছিলেন এবং এই নিয়েই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। চন্দনা কোনও মতেই স্বামীর মদ খাওয়া মানতে পারেননি। নিহত দম্পতির ছেলে স্বরূপ জানা বলেন, ” প্রায় দিনই নেশাভাঙ করে বাড়ি ফিরতেন বাবা। এ নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা বাবা-মায়ের মধ্যে। শুক্রবার রাতে আমি ও বোন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ফলে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানিনা। ভোরের দিকে কিছু চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে গেছিল। এসে দেখি মায়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। এরপরই বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানাই। তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদ জানিয়েছেন,
“এই ঘটনায় একটি খুন ও একটি অস্বাভাবিকমৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” বলে জানিয়েছেন খবর পেয়ে ভোরবেলা পুলিশ গিয়ে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্ত্রী চন্দনার রক্তাক্ত দেহ। গ্রেপ্তার করে স্বামী নারায়ণকে। থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে জানা যায় বিষ খেয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য গত সোমবারই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট থানার দেনান সংলগ্ন আমলহান্ডা গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছিল শঙ্কর মান্না (৩৫) ও শম্পা মান্না (৩১)র মৃতদেহ। পারিবারিক অশান্তির জেরেই স্ত্রী শম্পাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন শঙ্কর। ওই ঘটনাতেও রাতারাতি অনাথ হয়ে গেছে দুই নাবালক নাবালিকা। সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরেই।

- Advertisement -
Latest news
Related news