শশাঙ্ক প্রধান: এ যেন চোরের সাতদিন আর গৃহস্থের একদিন। অভিযোগ অনেক দিনের গুপ্তপ্রণয় হাতে নাতে ধরে ফেলেছিলেন স্বামী। তারপর বেধড়ক মার ২জনকেই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর। মরণাপন্ন অবস্থায় প্রেমিককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। যদিও তাঁরও অবস্থা সঙ্কট জনক বলেই জানা গেছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার অন্তর্গত মালিগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার নিবেদিতা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত মহিলার নাম মিরজু তিরিয়া (৩৫)। মিরজুর স্বামী অভিযুক্ত রবি তিরিয়া।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে তিরিয়া দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলের বয়স ১২ বছর। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারনে বেশ কিছুদিন যাবত ওই দম্পত্তি একই জায়গার মধ্যেই দুটি পৃথক বাড়িতে বসবাস করত। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা নাগাদ মিরজু তিরিয়ার ঘরে প্রবেশ করে এক ব্যক্তি। সুকুমার ডোগরা নামে ৪৫ বছরের ওই ব্যক্তির বাড়ি ২ কিলোমিটার দুরে পাশের দক্ষিণ কলাপুঁজা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে স্ত্রীর ঘরে অন্য পুরুষ ঢুকেছে বুঝতে পেরেই রবি ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। ঘরে থাকা একটি শিলনড়া দিয়ে প্রথমে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে। স্ত্রী পড়ে যাওয়ার পর সুকুমারকে ধরে রবি। তাকেও কয়েকদফা এলোপাথাড়ি মারার পর সে ঘরের বাইরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর ফের পড়ে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রবি। ফের মারা হয় তাকে।
ইতিমধ্যে বেধড়ক মার খেয়ে বাড়ির বাইরে গিয়ে পড়ে গোঙাতে থাকে সুকুমার। সেই গোঙানির শব্দ পেয়ে লোকেরা ছুটে আসে। তারা ঘরের ভেতরে গিয়ে মিরজুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর যায় স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছে। সিভিক ভলান্টিয়ার মারফৎ খবর পেয়ে ছুটে আসে পিংলা থানার পুলিশ। আহত সুকুমারকে প্রথমে পিংলা গ্রামীন হাসপাতালে এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে শেষ খবর পাওয়া অবধি জানা গেছে। মিরজুকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সংগ্ৰহ করেছে। রবিকে বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।