নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় জীবনদায়ী ওষুধ নিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় আকাশে হঠাৎই অবাঞ্ছিত বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হল একটি টি এস এ ডব্লিউ ড্রোন (TSWA Drone)! মঙ্গলবার বিকাল ৫ টা নাগাদ পূর্ব মেদিনী পুরের মহিষাদল থানার আজড়া এলাকার বাসস্ট্যান্ডের সামনে এরকমই একটি ড্রোন পড়ে থাকতে দেখতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি কিছুটা আতংক ছড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। একটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় একেবারে ভিড়বহুল বাসস্ট্যান্ডের সামনে ড্রোনটি কোথা থেকে, কী উদ্দেশ্যে এসেছে, তা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে মহিষাদল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রোনটি উদ্ধার করে। কিন্তু ঘটনার সত্যতা জানার পর বিজ্ঞানের এক অত্যাশ্চর্য উদ্যোগ স্বস্তি জাগিয়েছে মানুষের মনে।
জানা গেছে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার আকাশপথে ওষুধ নিয়ে বারুইপুর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার উদ্দেশে আসছিল ড্রোনটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত জীবনদায়ী ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য এমনই উদ্যোগ নিয়েছে কিছু কোম্পানি যাতে সড়কপথ বা রেলপথের চাইতেও দ্রুত জীবনদায়ী ওষুধ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। জানা গেছে সম্প্রতি স্কাই এয়ার মবিলিটি কোম্পানি ও ফ্লিপকার্ট হেলথ যৌথভাবে ড্রোনের মাধ্যমে কলকাতা থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রাহকদের কাছে জরুরিভিত্তিতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার পন্থা অবলম্বন করেছে। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় কাজ হাতেকলমে শুরু করে দেখে নেওয়া হচ্ছে কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে।তার পরেই ধীরে গোটা রাজ্যে এই প্রকল্প চালু করা হতে পারে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই এই ড্রোন পাঠানো হচ্ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতে। কিন্তু ধোঁয়ার আধিক্যে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় সেটি জরুরিভিত্তিতে অবতরণ করে মহিষাদলে। পরে পুলিশ গিয়ে যা উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ড্রোনটি (Drone) আপাতত মহিষাদল থানায় রয়েছে। তবে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নয়, ওষুধ সরবরাহের জন্যই ড্রোনটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ড্রোনটির মধ্যে কোনও ক্যামেরাও ছিলনা। যদিও এই ড্রোন মারফত ওষুধ পাঠানোর বিষয়টি স্থানীয় পুলিশের জানা না থাকায় প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্তি হয়েছিল পরে জানা যায় রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই এই কাজটি করছে ওই ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থাটি। সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ড্রোনটি একটি মনিটরের সাহায্যে বারুইপুর থেকেই নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছিল। আজকের ওয়েদার রিপোর্ট মোতাবেক কোনও সমস্যা থাকার কথা ছিলনা তবে হঠাৎ করেই এই অবাঞ্ছিত বৃষ্টির কারনে দৃশ্যমানতা কিছুটা কমে যাওয়ায় অবতরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও জরুরি ক্ষেত্রে আমরা বিকল্প পথ ব্যবহার করতে পারি। এই পদ্ধতির ফলে সড়ক পথের চাইতে অনেক কম সময়ে রোগীর কাছে ওষুধ পৌঁছাতে পারব যাতে দ্রুত তাঁর চিকিৎসা শুরু করা যায়। আপাতত: কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজনেই এর ব্যবহার করা হবে।