Saturday, July 27, 2024

কৃষি জমি জুড়ে অবিন্যস্ত বিদ্যুৎ তার! সাত সকালে মাঠে নেমেই মৃত্যু পিংলার কৃষকের

- Advertisement -spot_imgspot_img
নাড়ুগোপাল মন্ডল

শশাঙ্ক প্রধান: সাত সকালেই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার অন্তর্গত একজন কৃষকের। এই অকাল মৃত্যুর পেছনে বিদ্যুৎ দপ্তরের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার এমনই ঘটনা ঘটেছে পিংলা জলচক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভেটিয়া মৌজার কৃষি জমিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম নাড়ুগোপাল মন্ডল।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
এভাবেই ঝুলে থাকে বিদ্যুতের তার

৫১ বছর বয়সী নাড়ুগোপালের বাড়ি ভেটিয়া গ্রাম লাগোয়া পশ্চিমচক গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভেটিয়া মৌজা এলাকার কৃষিজমিতে নিজের চাষযোগ্য জমির পাশাপাশি জলসেচের জন্য একটি মিনি ডিপটিউবেল রয়েছে নাড়ুগোপাল মন্ডলের। পাশাপাশি অন্যান্য কৃষকের জমিতেও জল বিক্রি করতেন তিনি। ফলে দু’বেলাই তাঁকে ওই মিনির কাছে যেতে হত জল সরবরাহ করার জন্য। বুধবার সকালেও গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় জমির মধ্যে পড়ে থাকা ১১হাজার কিলোভোল্ট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ তারের সংস্পর্ষে এসে লুটিয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ চন্ডীচরণ সামন্ত জানিয়েছেন, সকাল ৭টা নাগাদ এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। কৃষিজমির ওপর দিয়ে যাওয়া উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী তার জমিতে পড়ার জন্যই এই দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎ দপ্তরের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ কৃষিজমির ওপর ঝুলে থাকা তারগুলিকে সঠিক উচ্চতায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বারংবার বিদ্যুৎ দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছিল কিন্তু দপ্তরের তরফে গ্রামবাসীদের আবেদনে গ্রাহ্য করা হয়নি।

পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ সংগ্ৰহ করতে এলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। জনতা দাবি করে, কৃষিজমি বা লোকালয়ের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ পরিবাহী তারগুলিকে হয় নিরাপদ দূরত্বে প্রতিস্থাপন করতে হবে নচেৎ কেবল তারের ব্যবস্থা করতে হবে। উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা জনতাকে আশ্বস্ত করে মৃতদেহ সংগ্ৰহ করেছে ময়নাতদন্তের জন্য।

কিভাবে মরনফাঁদে পড়েছিলেন নাড়ুগোপাল, দেখাচ্ছেন কৃষক

পশ্চিমচকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নাড়ুগোপালের স্ত্রী ছাড়াও ১৭বছরের একটি ছেলে রয়েছে। জলচক নাটেশ্বরী বিদ্যায়তনের ছাত্র নাড়ুগোপাল মন্ডলের ছেলে সুব্রত মন্ডল এবছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে ওই ছেলেকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন নাড়ুগোপালের স্ত্রী দিপালী। গ্রামবাসীদের বক্তব্য দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুতে সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণের পরিমান অত্যন্ত কম। তাঁদের দাবি বিদ্যুৎদপ্তরকে এই পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এদিকে নাড়ুগোপাল মন্ডলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটার খবর পেয়ে বিদ্যুৎ তারগুলি প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করেছেন বিদ্যুৎকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য খুঁটির মাথায় থাকা চিনামাটির ইনস্যুলেটার ভেঙে গিয়েই ওই তারটি খসে পড়েছিল।

- Advertisement -
Latest news
Related news