নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং তৃনমূল কংগ্রেস আছে নিজের জায়গাতেই। গোষ্ঠী কোন্দলে কোনও ছেদ নেই । সবংয়ের আদি তৃনমূলকে ধুরমুশ করে নব্য তৃনমুলই প্রধান এখন কিন্তু তাতে নব্যতর ছাড়বে কেন? সুতরাং হালে কংগ্রেস বা অন্যদল থেকে তৃণমূলে আসা বনাম একটু পুরানোদের দ্বন্দ্ব বহাল। আর সেই দ্বন্দ্বের জেরেই ধুন্দুমার বেধে গেল সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনায় এক তৃনমূল কর্মী ছুরিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। একজনকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও আরেকজনকে সবং গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বলপাই গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌরহরি বেরা জানিয়েছেন, “ভাগ্যের জোরে বেঁচে গিয়েছি। আমাকে খুন করার জন্যই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমাদের অঞ্চল যুব সভাপতির ভাড়া করা বাহিনী। কোনও মতে পালিয়ে বেঁচেছি। আর একটু এদিক ওদিক হলেই মরে যেতাম। অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দিয়ে পালাতে না পারলে আজ ওরা আমাকে মেরেই ফেলত। ৪ কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে ২৫ জনের একটা বাহিনীকে আনা হয়েছিল আমাকে খুনের জন্যই। এনেছিল আমাদেরই যুব সভাপতি তপন মাইতি।” ঘটনা শনিবার রাত ৮ নাগাদ। বলপাই অঞ্চলের পানপাড়া পার্টি অফিস থেকে উপপ্রধান গৌরহরি বেরা ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মী চা খেতে গিয়েছিলেন ৫০০ ফুট দূরে সমিতির কার্যালয় সংলগ্ন চায়ের দোকানে। চা খেয়ে ফেরার পথেই আক্রান্ত হন বেরা আর তাঁর সহকর্মীরা।
উপপ্রধান অভিযোগ করেছেন, ” সবে মাত্র সবংয়ের ব্লক অফিসে মানস ভূঁইয়া আর অমল পান্ডার নেতৃত্বে ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা থেকে ফিরে আমাদের পানপাড়ার দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে কয়েকজন মিলে চা খেতে যাই। তখনই এই কান্ড। শঙ্খপাড়া থেকে প্রায় ২৫জনের একটি বাহিনী আনা হয়েছিল। মদ্যপ ওই দুর্বৃত্তদের হাতে ছিল ভোজালি, টাঙ্গি, নিমচা, ছুরি জাতীয় অস্ত্র। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল দলের যুব সভাপতি নিজে। একটু দূর থেকে নির্দেশ দিচ্ছিল ও।” উপপ্রধান আরও জানিয়েছেন, ওই যুব সভাপতি গত বিধানসভা নির্বাচনের মুখেই দলে আসে কংগ্রেস থেকে। আর বাকিরা এই হালে দলে এসেছে। আর এসেই আমাদের ওপর আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে।”
গৌরহরি বেরা জানান, “শুক্রবার পানপাড়া বুথের একটা জায়গায় মোরাম বেছানোর কাজ চলছিল। সেখানেই তপনের লোকজন হাজির হয় এবং রাস্তার জন্য বরাদ্দ কিছু মোরাম জোর করে তুলে নিয়ে যায় নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহারের জন্য। তারই প্রতিবাদ করেছিলাম বলে আমাকে কুৎসিত গালাগালি ও খুনের হুমকি দেয় ওরা। আমি বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরও করেছিলাম। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তারা আক্রমন করবে ভাবতেই পারিনি। ”
জানা গেছে অভিযুক্তদের আক্রমনে তাপস মান্না নামে এক কর্মীর পেটে ছুরি ঢুকে যায়। আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ভোজলির কোপে হাতে গুরুতর আঘাত নিয়ে অমল কর নামক আরেক কর্মী সবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় সবং থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বারংবার ফোন করেও প্রতিক্রিয়া মেলেনি তপন মাইতির। সবংয়ের বরিষ্ঠ তৃনমূল নেতা তথা তৃনমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা বলেছেন, ” হ্যাঁ ঘটনা একটা ঘটেছে কিন্তু কী ঘটেছে তা জানার অবকাশ হয়নি। আপাততঃ আহত কর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত আছি।”