নিজস্ব সংবাদদাতা: আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ছিলই। সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল দফায় দফায় বৃষ্টি কিন্তু সে সমস্তকে পরোয়া না করেই যেন লালপতাকার ঢেউ। কয়েকদিন আগেই মন্ত্রীসভা থেকে অপসারিত হয়েছেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। স্বজন পোষন, দুর্নীতি আর এক আদিবাসী কন্যাকে প্রতারনার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই ডেবরায় দাঁড়িয়ে ভরা ভিড়ে সিপিএম নেতৃত্বের ঘোষণা একটা বিধায়ক বা মন্ত্রী নয়, তৃনমূলের মাথা থেকে পা সর্বত্রই ওই একই অভিযোগ। আর সেরকমই কয়েকদফা অভিযোগ নিয়ে সোমবার , সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনই ডেবরায় একই সাথে ৫ টি দপ্তর ঘেরাও করলেন সিপিএম সভ্য সমর্থকরা।
এদিন দূর্নীতির ও লুঠের বিরুদ্ধে আছড়ে পড়া লালপতাকার মিছিল থেকে শ্লোগান তোলা হল, কাজ চাই কাজ দাও, বকেয়া মজুরী অবিলম্বে মেটাও, কৃষকের জন্য বরাদ্দ ৪২০০ কুন্টাল গোবিন্দ ভোগ ও বাদশাভোগ ধানের বীজ নেতারা চুরি করে পাচার করলে কেনো জবাব দাও ইত্যাদি, ইত্যাদি। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হওয়ার জন্যও দায়ী তৃনমূলের সরকার এমন কয়েক গুচ্ছ দাবী নিয়ে ডেবরা বিডিও, কৃষিদপ্তর সহ একসাথে পাঁচটি দপ্তরকে লালঝাণ্ডা আর মানব প্রাচীর দিয়ে ঘিরে স্তব্ধ করে চলে অবরোধ বিক্ষোভ। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও ব্যাপক মানুষের এই আন্দোলন এদিন এও দাবি করেছে যে
বিডিওকে প্রতিটি দূর্নীতির তথ্য সমেত অভিযোগ করা হয়েছে বারংবার কিন্তু কোনও একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বিডিও।
অবাক করে দিয়ে এদিনের মিছিলে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার মহিলা এবং আদিবাসী, তপশিলী জনজাতির অংশ।সরকারি নানান সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্প থেকে বঞ্চিত উপেক্ষিত গরীব মানুষের নজর কাড়া ভিড়ে বিক্ষোভ অবস্থান সহ ঘেরাও চলে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পাঁচ ঘন্টা ধরে ব্লক দপ্তর, কৃষি অধিকর্তা, খাদ্য নিয়ামক, সমবায় ও যুব কল্যান এমব পাঁচটি দপ্তর কে একসাথে অবরুদ্ধ করলেন বিক্ষুব্ধ জনতা। জনগনের দাবী ও প্রশ্নের উত্তর এড়ানো চেষ্টা করলে দপ্তরের সামনে ডেবরা ৬নং জাতীয় সড়ক থেকে দক্ষিনে সবং, পিংলা, ময়না, পটাশপুর সহ দীঘাগামী রাজ্য সড়ক অবরোধ করে দখল নেন বিক্ষোভ কারী মানুষ। পাঁচ ঘন্টা ধরে অচল হলো ব্লক প্রসাশনের পাঁচটি দপ্তর।
এই বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে নিজের দপ্তর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় বিডিওকে। মাইক ধরে কিছু কথা বলার পর তিনি ১৫ দিন সময় চেয়ে বলেন যে সমস্ত দূর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে সব গুলিই তদন্ত করে পদক্ষেপ নেবেন। বিকাল সাড়ে তিন টায় সময় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ঘোষনা করা হয় আমরা বিডিও সাহেব কে এক মাস সময় দিলাম। এত দূর্নীতির বিরুদ্ধে আইনানুসারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য, আর গরীব মানুষের প্রাপ্য গুলো মেটানোর জন্য। নইলে বিডিও কার্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘেরাও করা হবে। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা বিজয় পাল, সমর মুখার্জি, প্রানকৃষ্ণ মন্ডল, সুমিত অধিকারী প্রমুখ।