শশাঙ্ক প্রধান: ফের পড়াশুনার বদলে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অভিভাবকের বকুনির জেরে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আর এবার এই ঘটনা ঘটল সবং থানা এলাকায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সবং থানার মোহাড় গ্রামপঞ্চায়েতে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃতার নাম তনুশ্রী খালুয়া। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের তনুশ্রী স্থানীয় শ্যামসুন্দরপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। গলায় গামছা দিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে পড়েছিল তনুশ্রী।
স্থানীয় সূত্র মারফৎ জানা গেছে এখনও অবধি কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি তনুশ্রীর কিন্তু তনুশ্রীর মা প্রতিবেশী এবং স্থানীয় সিভিক ভলেন্টিয়ারকে জানিয়েছেন, মোবাইল নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ব্যস্ত থাকার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে মেয়েকে বকাবকি করেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই চুপচাপ হয়ে গেছিল তনুশ্রী। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, ‘
কোনমোহাড় গ্রামের গরিব কৃষিজীবী পরিবারের তাপস খালুয়ার তিন মেয়ের মধ্যে মেজো তনুশ্রী। তাপস অনেক কষ্টে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনমাস আগে। মেজো মেয়ে সামনের বছর মাধ্যমিক দেবে, পড়াশুনা করবে এটাই পরিবার চায়। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিল তনুশ্রী। এই নিয়ে তার মা বকাবকি করেছিল। পড়াশুনা বা ঘরের কাজের বদলে সারাদিন মোবাইল নিয়ে কী করে? এই নিয়ে মায়ের বকুনি ছিল। তারপরই এই ঘটনা।
সন্ধ্যাবেলায় রান্না করার জন্য রান্না ঘরে চলে গিয়েছিল তনুশ্রীর মা। সেই সুযোগেই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলেই অনুমান। রান্নাঘর থেকে কিছু প্রয়োজন হওয়ায় মা কয়েকবার ‘তনু’ করে ডেকেও সাড়া না পাওয়ায় সন্দেহ হয় মায়ের। এরপরই খোঁজ শুরু করে মা, বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা থাকলেও তা কোনও কিছুদিয়ে আটকানো ছিলনা। সেই দরজা ঠেলতেই খুলে যায়। মা ভেতর গিয়ে দেখে মেয়ে ঝুলছে। মায়ের চিৎকারে পাড়া প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তনুশ্রীকে নামায়। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে তার। এরপরই খবর দেওয়া হয় সবং থানায়। পুলিশ এসে মৃত দেহ উদ্ধার করে সবং থানায় নিয়ে আসে।
উল্লেখ্য মাত্র ১০দিন আগে এরকমই একটি ঘটনার স্বাক্ষ্য ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা। বাড়ির লোকের বকাবকিতে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। গড়বেতার ধবাবেড়িয়া গ্রামের সেই ছাত্রীর নাম বর্ণালি পাল (১৮), সে গড়বেতা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। পড়াশুনা করার বদলে মোবাইল নিয়ে1 সারাক্ষন ব্যস্ত থাকার জন্য বাড়ির লোকেরা বকাবকি করেছিল তাঁকে। তারপরই নিজের বাড়ির একতলার একটি ঘর থেকে তাঁর আগুনে দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়।