Saturday, July 27, 2024

Child Marriage : পশ্চিম মেদিনীপুরে নাবালিকাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে ফের অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ! থানায় গেলেন পূর্ব পাত্রের পরিবার

- Advertisement -spot_imgspot_img

শশাঙ্ক প্রধান: এক কন্যার বয়স ১৭ বছর ২ মাস। আইন সম্মতভাবে বিয়ের বয়স হতে এখনও ১০ মাস বাকি। সেই কন্যাকে বিয়ে করেছে তার প্রেমিক কিন্তু মেয়ের বাড়ি সেই বিয়েতে রাজি নয়। তাই গ্রামবাসীদের কাছে, রাজনৈতিক নেতাদের কাছে মেয়ের বাবার দরবার নাবালিকা কন্যাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অতঃপর গ্রামবাসী এবং শাসকদলের নেতারা ছেলের পরিবারকে চাপ দেন মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নতুবা বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ করবে মেয়ের পরিবার। বাধ্য হয়ে বিয়ে হয়ে যাওয়া স্বত্ত্বেও বাড়ির বধূকে বাবার কাছে ফিরিয়ে দেন ছেলের পরিবার। কিন্তু মেয়েকে ফিরে পেয়েই আসল মূর্তি ধারণ করলেন মেয়ের বাবা। অন্য পাত্র খুঁজে মেয়েকে বিয়ে দিলেন অন্যত্র। ঘটনায় ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী ও ছেলের পরিবারকে নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

সবং থানা এলাকার দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত একটি গ্রামে এমনই একটি ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই গ্রামেই মামাবাড়িতে থেকে মানুষ হওয়া এক যুবকের সাথে গত চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। যুবকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে ১২দিন আগে এক ভোর বেলায় মেয়েটি ছেলের মামাবাড়িতে গিয়ে হাজির হয় এবং জানায় তার বাবা তাকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। মেয়েটি আরও জানায় যে সে আর বাড়ি ফিরবেনা। এরপরই ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। মেয়ের বাবার নজর এড়ানোর জন্য বিয়ের পর মেয়েটিকে নিয়ে ছেলে তাঁর আত্মীয় বাড়ি চলে যায়। এদিকে মেয়ের বাবা বিষয়টা জানার পরই গ্রামবাসীদের দ্বারস্থ হয়। গ্রামবাসীদের জানায় তাঁর মেয়ে নাবালিকা তাই যদি মেয়েকে ফেরৎ না দেওয়া হয় তবে আইনের দ্বারস্থ হবেন তিনি।

গ্রামবাসীদের সম্মিলিত চাপের মুখে এবং আইনের ভয়ে পরিবারের গৃহবধূকে নিজেদের আত্মীয় বাড়ি থেকে ফেরত নিয়ে আসে এবং তার বাবার হাতে তুলে দেয় ছেলের পরিবার। ঘটনাটি ঘটে দিন চারেক আগে। এরপর তিনদিন আগে মেয়েকে সবং ব্লকেরই সারতা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন একটি গ্রামে মেয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে নিয়ে চলে যায় তার বাবা। মঙ্গলবার ছেলের পরিবার খবর পায় গতকাল অর্থাৎ সোমবার মেয়েটির অন্য এক পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি জানার পরই মেয়েটির সাথে আগে বিয়ে হওয়া যুবকের পরিবার গ্রামের লোকেদের স্মরণাপন্ন হয়। তাঁদের সাথে যে প্রবঞ্চনা করা হয়েছে তা জানান। এরপরই গ্রামের লোকেরা মেয়ের বাবার কাছে গেলে বাবা দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করে। তখন গ্রামের লোকেরা মেয়ে কোথায় আছে জানতে চায় কিন্তু জবাব দিতে পারেনা মেয়ের পরিবার। এরপরই ক্রুদ্ধ গ্রামবাসীরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

সবংয়য়ের এক তৃনমূল নেতা বলেন, “মেয়ের বাবার আবেদন, কাকুতি মিনতি দেখে গ্রামের লোকেরা ওই ছেলের পরিবারকে মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। যেহেতু বিষয়টি বেআইনি তাই আমরাও রাজনৈতিক ভাবে মেয়ের বাবার পক্ষেই দাঁড়াই। ছেলের পরিবারকে আমরাও বলেছিলাম মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে। কার্যত আমাদের সবারই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ছেলের পরিবার মেয়েটিকে ফেরত নিয়ে আসে এবং পরিবারের হাতে মেয়েটিকে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়ের বাবা আমাদের সবার সাথেই প্রবঞ্চনা করে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। যদি ঘটনা সত্যি হয় তবে শাস্তি হওয়া উচিৎ ওই বাবার।”

ছেলের পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, মেয়েটির পরামর্শ মেনেই বিয়ের পর দুজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অন্যত্র। গ্রামবাসীদের চাপে যখন মেয়েটিকে বাবার কাছে ফেরৎ আনা হচ্ছিল সে কান্নাকাটি করছিল এবং বলেছিল এটা তার বাবার একটা চাল। হাতে পেলেই তাঁকে আবার বিয়ে দেবে তাঁর বাবা। সেটাই করল তাঁর বাবা। আমরা জানি এই দ্বিতীয় বিয়ে মেয়েটি মেনে নেয়নি তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমরা কী করতে পারি?
মেয়ের বাবার সঙ্গে বারংবার ‘KGP-বাংলা’র এই প্রতিনিধি ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও প্রথমদিকে তিনি ফোন ধরেননি। পরে ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় শোনার পরই ফোন কেটে দেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

- Advertisement -
Latest news
Related news