Saturday, July 27, 2024

Midnapore: বর্গা জমি দখল করছে তৃণমূলের ব্লক সভাপতিই! পশ্চিম মেদিনীপুরে দলীয় পতাকা নিয়েই প্রশাসনের দ্বারস্থ গরীব প্রান্তিক চাষীরা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: বাম আমলে পেয়েছিলেন ধনী কৃষকের খাস হওয়া জমি চাষের অধিকার। সরকার বদলের পর সেই ধনী কৃষক এখন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। সেদিনের চাষের অধিকার পাওয়া গরীব প্রান্তিক কৃষকও এখন তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী, সমর্থক কিন্তু যদিও চরিত্র বদল হয়নি জোতদারের। এখন তিনি ব্লক সভাপতি, এলাকার দন্ডমুণ্ডের কর্তা, এলাকার নেতা আর বকলমে সেই জোতদারই। দল ক্ষমতায় সুতরাং কেড়ে নিচ্ছেন গরীব কৃষকদের অধিকার পাওয়া সেই সব জমি। কথা গুলো সিপিএমের মত শোনালেও সিপিএমের নয়, তৃ কথা তৃণমূলেরই, তৃনমূল কর্মী সমর্থকদের। ২০১১ সালের পালা বদলের পর ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে জোতদারের দল। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে গরীব কৃষকের জমি এমন অভিযোগ উঠছিল। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সেই সব কেড়ে নেওয়া জমি ফের দখল করছেন কৃষকরা। এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে খোদ দলীয় সভাপতির বিরুদ্ধে গরীব কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামলেন তৃণমূলেরই একদল কর্মী সমর্থক। সোমবার এমনই কান্ড দেখল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানা এলাকার বাসিন্দারা।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভপতি স্থানীয় তৃনমূল নেতা হীরালাল ঘোষের কাছে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে ওই জমিচ্যুত কৃষকরা জানিয়েছেন, বাম আমলে চন্দ্রকোনা দু’নম্বর ব্লকের বান্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জোতদার ঘোষ পরিবারের খাস হওয়া প্রায় ৪৫ বিঘে চাষের জমি বান্দিপুর, পলাশা, ভগীরথপুর, দেওড়া সহ একাধিক গ্রামের প্রায় ১০০ ও বেশি চাষীকে বণ্টন করা হয়। তৃনমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুলিশ ও প্রশাসনকে সামনে রেখে সেই সব জমি থেকে একের পর কৃষককে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সেই উচ্ছেদের পুরোভাগে রয়েছেন ওই ঘোষ পরিবারের বর্তমান সদস্য প্রসূন ঘোষ। যিনি সদ্য দলের ব্লক সভাপতি পদে বসেছেন এবং তাঁকে সর্বত ভাবে সাহায্য করছেন চন্দ্রকোনার বিধায়ক অরূপ ধাড়া। এদিন চন্দ্রকোনা-২ ব্লক প্রশাসনের কাছে চন্দ্রকোনা ধান্যগাছি ও ভগিরথপুর গ্রামের একাধিক কৃষক হাতে প্ল্যাকার্ড ও তৃণমূলের দলীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ ডেপুটেশনে শামিল হয়। বিক্ষোভ কারীরা নিজেদের তৃণমূল কর্মী সমর্থক বলে দাবি করেছেন।

২০১১ সালে সরকার পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার বেশ কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পরেই হঠাৎ করে এলাকার সাধারণ কৃষকদের ভয় দেখিয়ে সেই জমি কেড়ে নিয়েছে বর্তমান তৃণমূল ব্লক সভাপতি প্রসূন ঘোষ এমনই অভিযোগ তুলছেন এলাকার চাষীরা। চাষীদের সমর্থন করে চন্দ্রকোনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং তৃনমূল নেতা হীরালাল ঘোষ বলেন, বিষয়টি জানার পরেই আমি ব্লক ভূমি দপ্তর এর আধিকারিক এর দারস্ত হয়ে জানতে পেরেছি কৃষকরা যে সমস্ত জমিগুলির চাষ করছিলেন সেগুলি সবই খাস খতিয়ানের জায়গা । আমাদের জমি আন্দোলনে দাঁড়িয়ে সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, তারপরেও কেউ যদি এই ধরনের কৃষকদের জমি কেড়ে নেয় সেটা সরকারবিরোধী ও দলবিরোধী কাজ ।

যদিও ব্লক সভাপতি প্রসুন ঘোষের দাবি,” বাম আমলে আমরা যখন বিরোধী রাজনীতি করতাম তখন আমাদের কিছু জমি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়া হয়েছিল এমনকি তিনি বলেন চাষীরা জমির কাগজপত্র না দেখাতে পারায় আমাকে জমি ছেড়ে দিয়েছে। তাই আমি আমার জমি চাষ করছি। হঠাৎ করে কেন এই ঘটনা ঘটলো আমি বুঝতে পারছি না। এটা কেউ না কেউ চক্রান্ত করছে। তিনি আরো বলেন দল বিরোধী কাজে মতদ দিচ্ছে কেউ, পুরো বিষয়টি দলকে জানানো হবে।” চন্দ্রকোনা তৃণমূল বিধায়ক অরূপ ধাড়ার দাবি যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল তারা আদৌ তৃণমূল কর্মী নয়, তারা ভাড়া করা তৃণমূল কর্মী। তারা দিনে তৃণমূল রাতে সিপিএম। তৃণমূল বিধায়ক আরও বলেন প্রসূন ঘোষ তার জমির দখল নিয়েছে অনেকদিন আগেই কিন্তু এখন কেন এই কথা উঠছে।

স্থানীয় সিপিএম নেতারা বলেছেন, এটাই তৃণমূলের আসল রূপ। শুধু চন্দ্রকোনা নয়, সারা বাংলা জুড়েই গরীব মানুষের অধিকার পাওয়া জমি কেড়ে নিচ্ছে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকা জোতদারের দল। এর বিরুদ্ধে দিকে দিকে কৃষকরা সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন। পার্টির তরফেও আগামী দিনে ওই হারানো জমি পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম শুরু হবে। তিনি যেই দলই করুক গরীব কৃষকের এই লড়াইয়ের পাশে আমাদের পার্টি ছিল থাকবে।

- Advertisement -
Latest news
Related news