নিজস্ব সংবাদদাতা: কলাইকুন্ডা(Kalaikunda Air Base) বায়ুসেনা ঘাঁটির মহড়া দেওয়া সেল কুড়িয়ে তা ভাঙার চেষ্টা করায় প্রবল বিস্ফোরনে মৃত্যু হল ১ ব্যক্তির। ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই পরিবারের আরও ৩ সদস্য। সোমবার সাত সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত অঙ্গারনালি গ্রামে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/04/IMG-20220404-WA0016.jpg)
ঝাড়গ্রাম পুলিশ সূত্রে জানা গেছে নিহত ব্যক্তির নাম রামজীবন রানা (৪৭)। ঘটনায় আহত হয়েছেেন তার স্ত্রী মালতী রানা,মেয়ে মেনকা রানা এবং জামাই সুরজিৎ রানাকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের আঘাতের পরিমান কমবেশি জোরালো হলেও অবস্থা সঙ্কটমুক্ত বলেই জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ প্রচন্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে অঙ্গারনালি গ্রামের একাংশ। গ্রামের লোকজন শব্দের উৎস খুঁজে হাজির হন রানা পরিবারের বাড়িতে। এসে দেখেন রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে রয়েছেন রামজীবন। পরিবারের অন্য সদস্যরা যন্ত্রনাকাতর হয়ে ছটপট করছে। সাথে সাথে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী ভাঙাগড় হাসপাতালে। সেখানেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয় রামজীবনকে। বাকিদের তৎক্ষণাৎ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ওখানেই চিকিৎসাধীন তাঁরা। ঝাড়গ্রাম পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার মর্টার বা সেল জাতীয় বস্তু বিস্ফোরণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য এই অঙ্গারনালি গ্রাম ভারতীয় বিমানবাহিনীর (Indian Air Force) কলাইকুন্ডা ঘাঁটির বোমা নিক্ষেপ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দুধকুন্ডি নিকটবর্তী। এশিয়ার বৃহত্তম জঙ্গিবিমান ঘাঁটি কলাইকুন্ডার বায়ুসেনারা এই স্থানে আকাশ থেকে ভূমিতে বোমা নিক্ষেপের মহড়া দিয়ে থাকে। জঙ্গলাকীর্ন বিশাল এই মহড়াস্থলটি সাধারণের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ। যদিও পতিত ও বিস্ফারিত হাজার হাজার টন বোমাগুলির মধ্য থেকে পাওয়া ইস্পাত, তামা ও অন্যান্য ধাতব বস্তুর লোভে কেউ কেউ নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করেই ঢুকে পড়েন ওই প্রশিক্ষণ এলাকায়। সেলের পাশাপাশি মর্টার,কার্টিজ সহ বিভিন্ন এই সব ব্যবহৃত জিনিসের ধাতব অংশ লুকিয়ে সংগ্রহ করেন স্থানীয় গ্রামের মানুষ জন। এক থেকে দেড় কুইন্ট্যাল পর্যন্ত ধাতব বস্ত তারা সংগ্রহ করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে পুরোপুরি বেআইনী স্বত্ত্বেও প্রানের ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ এগুলি সংগ্ৰহ করে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণের সময় বেশ কিছু মর্টার বা কার্টিজ ফাটে না। সম্ভবতঃ তেমনই কোনও তাজা মর্টার থেকে ধাতু বার করতে গিয়ে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আকাশ পরিষ্কারথাকায় গত কয়েকদিন ধরেই আকাশ থেকে ভূমিতে টার্গেট প্র্যাকটিস করেছে কলাইকুন্ডা বায়ু সেনা। রবিবারই স্থানীয় পূজা উপলক্ষ্যে শ্বশুর বাড়ি এসেছিলেন রামজীবনের জামাই সুরিজিৎ রানা। সুরজিৎয়ের বাড়ি খড়গপুর গ্রামীন থানার কুচলাতাড়ি গ্রামে।সোমবার সকাল সকাল দুধকুন্ডি থেকে পরিত্যক্ত বোমার অংশ সংগ্ৰহ করতে চলে যান রামজীবন, মালতি ও তাঁদের মেয়ে জামাই মেনকা ও সুরজিৎ।
সকাল সাতটার কিছু আগে ধাতব বস্তু সংগ্ৰহ করে বাড়ি আসে। তার মধ্যে একটি বিস্ফোরণ না হওয়া মর্টার ছিল। মর্টারে ভেতরে প্রচুর তামা থাকে। সম্ভবতঃ মর্টারটি ভেঙে সেই তামা সংগ্ৰহ করতে গিয়েই বিস্ফোরণ ঘটে যায়।