নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় ২৪ ঘন্টা খোঁজ মেলেনি পোষ্য বেড়ালের। ফলে দুশ্চিন্তার শেষ ছিলনা পরিবারের কিন্তু যখন জানা গেল সেই পোষ্য পড়ে রয়েছে ৪২ ফুট নিচে একটি কুয়োর মধ্যে তখন নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে যায় পরিবারের। ২৪ঘন্টারও বেশি এই অবস্থার পর বাধ্য হয়ে গৃহকর্তা স্মরনাপন্ন হন খড়গপুর দমকল বিভাগের। অবশেষে দমকলকর্মীরা এসে উদ্ধার করলেন সেই বেড়ালটিকে। রবিবার সেই বেড়ালকে উদ্ধার করে পরিবারের কৃতজ্ঞতা অর্জন করে নিলেন দমকলকর্মীরা। আর কুয়ো থেকে ওঠার পর বেড়ালটি যে সেই নিজের ভাষায় ম্যাঁও-থ্যাঙ্কু দিয়ে আনন্দে লাফ দিয়ে পালিয়েছে তারপর আর পাক্কা ২ঘন্টা তল্লাটে দেখা মেলেনি তার।
রবিবার বেড়াল উদ্ধারের এমনই ঘটনা দেখল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানার কসবা নারায়ণগড়। জানা গেছে এই এলাকার গৃহস্থ নির্মলেন্দু বিকাশের বেড়ালের খোঁজ মিলেছিলনা শনিবার থেকে। দিনে অন্ততঃ ২বেলা তাকে ভাত মেখে খাবার দিতেন নির্মলেন্দু বাবুরা। বেড়াল যেখানেই থাকুকনা কেন দুপুর রাতে বাড়িতে ঢুকে ম্যাঁও, অর্থাৎ খাবার চাইত। দুপুরে খাবার পর বাড়ির সোফায় একটা ভাতঘুম দিয়ে পাড়া বেড়াতে বেরিয়ে পরার পর ফের রাতে খেয়ে দিয়ে কারো না কারো বিছানায় ঘুমাতো সে। কিন্তু শনিবার তাকে সারাদিন দেখতে না পেয়ে উৎকণ্ঠায় পড়ে যায় পরিবার। সারা পাড়া চষেও খোঁজ মেলেনি তার।
নির্মলেন্দুবাবু জানান শনিবার রাতে কার্যত খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার সকালে অনেক ডাকাডাকির পর পরিবারের কেউ একজন ক্ষীণ কন্ঠে ম্যাঁও ডাক শুনতে পেয়ে শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখেন একটি পরিত্যক্ত কুয়োর অন্ধকার গর্ত থেকে আওয়াজ আসছে। টর্চের আলো ফেলে দেখা যায় সেই গভীর গর্তে পড়ে রয়েছে পরিবারের যাতে পোষ্যটি। এত গভীর থেকে কী করে বেড়ালকে উদ্ধার করা যায় ভাবতে ভাবতে শেষ অবধি নির্মলেন্দু বাবু যোগাযোগ করেন খড়্গপুরের দমকল বিভাগে।খবর পেয়ে দমকলের একটি ওয়াটার টেন্ডার সহ দমকল বিভাগের কর্মীরা উপস্থিত হন।
কুয়োতে জল কম থাকায় বেড়ালটি তখন ৪২ ফুট নিচে। দমকল কর্মীরা কুয়োতে জল ভরা শুরু করেন। জল বেশকিছুটা ভর্তি হওয়ার ফলে বেশকিছুটা উপরে উঠে আসে বেড়ালটি। নাইলনের ব্যাগ ও মাছ ধরার জাল সাইকেল রিংয়ে বেঁধে দড়ির সাহায্যে নামানো হয় কুয়োর মধ্যে। জাল ও ব্যাগের মধ্যে ঢুকে পড়ে বিড়ালটি।এরপর দড়ি টেনে ওপরে তুলে আনেন দমকলকর্মীরা। কুয়ো থেকে ওপরে উঠে লম্বা লাফে এলাকা ছেড়ে বেড়ালটি। দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন বিড়ালটি সুস্থ রয়েছে কোনো রকম আঘাত পায়নি। নির্মলেন্দু বাবু জানিয়েছেন, পাক্কা ২ ঘন্টা পর ধাতস্থ হয়ে ফিরে এসেছে বেড়ালটি। পোষ্যকে পেয়ে খুশি নির্মলেন্দু বাবু ও তার পরিবার।কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ধন্যবাদ জানান দমকল কর্মীদের। কুয়োটি ঢাকার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাঁরা।