নিজস্ব সংবাদদাতা: দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পৌরসভারয় নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫ জন গোঁজ প্রার্থীকে শোকজ করল বিজেপি আর এই ৫ জনের মধ্যে ৩জনই রয়েছেন মেদিনীপুর পুরসভা এলাকার। বাকী ২জন খড়গপুর পৌরসভার। শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেস যখন নিজেদের গোঁজ সরানোর জন্য ওপরে তর্জন গর্জন ও ভেতরে অনুনয় বিনয় করে যাচ্ছে তখন দলবিরোধী সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল বিজেপির পৌর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
১৪ই ফেব্রুয়ারি বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির তরফে ওই ৫ গোঁজ প্রার্থীকে পৃথক পৃথক ভাবে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘ আপনি ২০২২ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আপনাকে দলীয় নেতৃত্ব বারংবার নিষেধ বা অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও আপনার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন নাই। আপনার বিরুদ্ধে দল কেন শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনা এখন থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে তার উত্তর দিন। দলের জেলা সভাপতি তাপস মিশ্রের স্বাক্ষর সম্বলিত এই চিঠি দেওয়া হয়েছে ওই ৫ গোঁজ প্রার্থীকে।
উল্লেখ্য বিজেপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকার বাইরে গিয়ে মেদিনীপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী
শুভজিৎ দাস ওরফে বান্টির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দেবব্রত চক্রবর্তী । ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী মিলন মাইতির বিরুদ্ধে লড়ছেন কাবেরী মন্ডল এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী তনুশ্রী মন্ডলের বিরুদ্ধে লড়ছেন গোঁজ সুমিতা বেরা। অন্যদিকে খড়গপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন চন্দনা সরকার যেখানে দলীয় প্রার্থী হয়েছেন সীমা ঘোষ রায় । একই ভাবে খড়গপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ালক্ষী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির দলীয় প্রার্থী বি লীলা। এই পাঁচজনকেই শোকজ করেছে দল। দলীয় সূত্রে খবর বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই প্রার্থীরা জনগণের উদ্দেশ্যে দলীয় লিফলেট ছড়িয়ে নিজেদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা না করলে নির্বাচনের আগেই এঁদের দল থেকে বহিস্কার করার ঘোষণা করতে চলেছে।
অন্যদিকে ১২তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও দলের বিরুদ্ধে গিয়ে গোঁজ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে পারেনি শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেস। ওপরে অবশ্য হম্বিতম্বি বজায় রেখেছেন তৃনমুল নেতৃত্ব। অন্যদিকে ভেতরে বলে কয়ে নির্বাচন থেকে সরে আসার জন্য দলের গোঁজদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এই ভাবে মেদিনীপুর পুরসভার ২নম্বর ওয়ার্ড থেকে সোনালী চক্রবর্তীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে সমর্থ হলেও খড়গপুর পৌরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়া পাল কিংবা ক্ষীরপাই পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুনিতা হালদারকে সরানো যায়নি লড়াই থেকে।
মঙ্গলবার বিকালেও খড়গপুর শহরের টাউন হল ময়দানে আইএনটিটিইউসি আয়োজিত এক সভায় রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া প্রমূখর উপস্থিতিতে জেলার পুরসভা নির্বাচন পরিচালন কমিটির দায়িত্বে থাকা বিধায়ক অজিত মাইতি জানিয়েছেন দল খড়গপুরে ৩৫টি আসনের সব কয়টিতে জেতার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন ” যদি কোথাও কোনও মতান্তর ও মনোমালিন্য থেকে থাকে অবিলম্বে আজকের মধ্যে মিটিয়ে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো প্রার্থীর পক্ষে কাজে নেমে পড়তে হবে। কারন আগে দল, আগে প্রতীক। তারপর ব্যাক্তিগত মতামত।” এরপরই তাঁর ঘোষণা ” যে বা যারা তৃণমূলের নাম নিয়ে নির্দল বা গোঁজ হিসাবে কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বুধবার সকাল এগারোটা পর্যন্ত সময় দেওয়া হল। তার মধ্যে প্রচারপত্র দিয়ে দলের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। “