নিজস্ব সংবাদদাতা: ক’দিন প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারের পরই গোটা ভোট পর্ব থেকেই যেন হারিয়ে গেছিলেন তিনি। বুধবার ভোট গণনার পর বৃহস্পতিবার দলীয় কার্যালয়ে গিয়েই দলের কর্মীদের হাতে চড় থাপ্পড় খেলেন এক বিজেপি নেতা। পাশাপাশি তাঁকে বের করে দেওয়া হয় দলীয় কার্যালয় থেকেও। কাড়িয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইলটি। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/03/Screenshot_20220304-000258_WhatsAppBusiness.jpg)
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে বলে জানা গেছে। খড়গপুর শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে নিগৃহীত ওই বিজেপি নেতার নাম চঞ্চল কর। উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মার্চ মাসে চঞ্চল কর তৃনমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এই গোটা প্রক্রিয়াই ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হওয়া বিজেপি প্রার্থী তথা খড়গপুর শহর বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই হয়েছে বলে দাবি করেছেন চঞ্চল কর।
চঞ্চল কর দাবি করেছেন তালবাগিচায় অবস্থিত ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের এই বিজেপি কার্যালয়টি তিনিই তৈরি করেন। তৎকালীন বিজেপি সভাপতিকে নিয়ে এসে তা উদ্বোধনও করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই পার্টি অফিসেই কর্মীদের নিয়ে একটি সভা করছিলেন হিরণ। মিটিং চলাকালীন তিনি যখন পার্টি অফিসে ঢোকেন তখনই তাঁর ওপর চড়াও হন বিজেপির কিছু কর্মী।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/03/Screenshot_20220304-000215_WhatsAppBusiness.jpg)
চঞ্চল বলেন, ‘ হিরণ যখন কর্মীদের সামনে মিটিং করছেন তখন তাঁর সামনেই এই ঘটনা ঘটে। হিরণের নির্দেশেই আমাকে মারধর করার পর অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমার মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা হিরণের প্রশ্রয়েই হয়েছে। ওই পার্টি অফিস আমারই তৈরি করা অথচ আমাকেই বের করে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে হিরণ বলেছেন, ” ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সদস্য হয়ে আমার রীতিমতো লজ্জা লাগছে এই নেতার ব্যবহারে। নির্বাচনের শুরুতে দু’একদিন কাজ করার পরই তিনি হঠাৎই বসে যান। শুধু তাই নয়, আমাদের একের পর এক কর্মীদের হুমকি দিতে থাকেন যাতে তাঁরা আমার হয়ে কাজ না করেন। কারো কাজ কেড়ে নেওয়া হবে, কাউকে দেখে নেওয়া হবে ইত্যাদি হুমকি দিয়ে বসিয়েও দেওয়া হয় নির্বাচনী প্রচার থেকে। আমাদের সঙ্গে থাকার নাম করে চঞ্চল কর প্রানপন চেষ্টা করে গেছেন আমাকে হারানোর জন্য। এটা প্রকাশ্য হয়ে গেছে যে উনি কীভাবে পেছন থেকে ছুরি মারার চেষ্টা করেছেন সেই ক্ষোভ থেকেই হয়ত কোনও কর্মী ওঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।”
এদিকে চঞ্চল করের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়তেও দেখা গেছে উপস্থিত কর্মীদের। মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে একাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থক বলতে থাকেন যে তাঁদের ব্যাক্তিগত ভাবে কখনও ফোন করে কখনও বা সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে হিরণের হয়ে প্রচারে না নামার জন্য। কর্মীদের একাংশ আবার দাবি করেছেন, প্রথম দিকে হিরণের হয়ে প্রচারে নামার পর তৃনমূলের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হিরণকে হারানোর ছক কষেছিলেন ওই বিজেপি নেতা। প্রায় দেড় দশক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃনমূলে যোগ দিয়েছিলেন চঞ্চল কর। কিন্ত তৃনমূলের তরফেও তাঁকে খুব উল্লেখযোগ্য কোনও স্থান দেওয়া হয়নি। খড়গপুরের গোষ্ঠী রাজনীতির ফলে আলাদা করে শহরের নেতাও হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। তালবাগিচা আর তার আশেপাশের একটি গোষ্ঠীর নেতা হিসাবেই থাকতেন। এরপর বিজেপিতে ঢোকা। কিন্তু বিজেপিও তাঁকে তেমন কোনও পদ, এমনকি পুরসভার টিকিটও দেয়নি। সব মিলিয়ে হতাশ এই নেতাকে এদিন কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পর আরও হতাশ লেগেছে।