নিজস্ব সংবাদদাতা: বউ দেখতে সুন্দর তাই স্বামীর মনে ঘুট ঘুট করে সন্দেহ। এ সন্দেহ এমনই যে কুরে কুরে খায় নিজেকে। সন্দেহের আগুনেই বেড়ে ওঠে সন্দেহের বংশ। সব সময় মনে হয় বউয়ের সঙ্গে অন্য কারও পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। কিছু ধরা পড়েনা আর না পড়লে আরও সন্দেহ বাড়ে। শেষমেশ সন্দেহর বশেই বউকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিলেন স্বামী। খুনের এই ঘটনাকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালানোর পরিকল্পনা করেও পরে বিবেক তাড়নায় ভেঙে পড়ে নিজেই আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী। বুধবার রাতের এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার অন্তর্গত রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রামগড় গ্রামে। পুলিশ স্বামীকে গ্রেফতার করেছে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/04/Screenshot_20220428-153751_WhatsAppBusiness.jpg)
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবার সাত সকালে রামগড় গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত বিজলী স্থানীয় ভিলেজ পুলিশ সুশান্ত কপাটের কাছে গিয়ে জানায় যে, সে তাঁর স্ত্রী আস্থা বিজলীকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করেছে। ঘটনার শোনার পরই নিজের চোখে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দাসপুর পুলিশকে খবর দেন ওই ভিলেজ পুলিশ। খবর পেয়ে দাসপুর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দাসপুর পুলিশের ও সি অমিত মুখোপাধ্যায় প্রসেনজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে
সংবাদ মাধ্যমের সামনেই স্বামী প্রসেনজিৎ ভেঙে পড়ে স্বীকার করে নেয়, সে নিজেই স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করার পর গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে নিজের স্ত্রীকে পরকীয়ায় জড়িত বলে সন্দেহ করত সে। প্রসেনজিৎ জানিয়েছে যে বারবার স্ত্রীকে নিষেধ করা স্বত্ত্বেও সে পাড়ার যুবকদের সাথে কথা বলত। এই নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। বুধবার রাতে ফের ওই একই ব্যাপার নিয়ে বচসা চরমে ওঠে। এরপরই নিজের স্ত্রী গলা টিপে ধরে খুন করে। পরে বাড়ির চিলে কোঠার একটি অংশে ঝুলিয়ে দেয় বউয়ের শাড়ি দিয়ে। এরপর সে নিজেই বউয়ের হয়ে একটি আত্মহত্যা লিপি বা সুসাইড নোট লিখেছিল। কিন্তু যত রাত গড়িয়েছে ধীরে ধীরে সে ভেঙে পড়তে থাকে এবং সকাল হতেই ছুটে যায় ভিলেজ পুলিশের কাছে। নিজের কীর্তি খুলে বলে সে।
ঘাটাল মহকুমা পুলিস আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী জানিয়েছেন,” প্রসেনজিৎ বিজলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে পুলিসের কাছে স্বীকার করেছে যে ঝগড়ার সময় রাগের বশে স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে ফেলেছে।” পুলিশ ২২ বছরের আস্থা বিজলীর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। বছর পাঁচেকের বিবাহিত জীবন প্রসেনজিৎ ও আস্থার। তাঁদের ১ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। আস্থার বাপের বাড়ি দাসপুরেই ধর্মা এলাকায়। আচমকা ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় বাকরুদ্ধ প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, আপাত সুন্দরী হওয়ায় স্ত্রীকে নেহাৎই সন্দেহের বশে খুন করেছে প্রসেনজিৎ।