নিজস্ব সংবাদদাতা: ইউটিউব (YouTube) থেকে একটি নতুন কৌশল রপ্ত করে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা এবং মা। কিন্তু মারাত্মক বিভ্রাটে তাই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ালো ৬ বছরের শিশুকন্যার। মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল থানা এলাকার সরবেড়িয়া গ্রামে শনিবার দুপুর বেলা। জানা গেছে মৃত শিশুকন্যার নাম শুভশ্রী মান্না। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাশ ওয়ানের ছাত্রী ছিল শুভশ্রী।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/05/Screenshot_20220529-211306_YouTube.jpg)
শনিবার দুপুর ১১টা নাগাদ শুভশ্রীর মা মেয়েকে নিয়ে সাঁতার শেখাতে বাড়ির পাশেই একটি পুকুরে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঘটনার সময় পুকুর পাড়ে ছিলেন শুভশ্রীর বাবা চন্দন মান্নাও । স্থানীয় সূত্র মারফৎ জানা গেছে , একটি অদ্ভুত প্রকৌশল ব্যবহার করা হয়েছিল এই সাঁতার শেখানোর জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত: সেই প্রকৌশল ব্যর্থ হওয়ায় ঘটে যায় ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি।
কী সেই প্রকৌশল? উত্তরে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি কাপড়ের সঙ্গে ৬টি বড় আকারের ঠান্ডা পানীয়ের শূন্য বোতল বেঁধে দিয়ে সেই কাপড়টি আবার বেঁধে দেওয়া হয় শরীরের সঙ্গে। এমনভাবে ওই বোতল যুক্ত কাপড়টি বাঁধা হত যাতে শিশুটির পিঠের দিকে এবং দু’পাশে বোতল ভাসতে পারে যা কিনা লাইফ জ্যাকেটের মত কাজ করে। বোতলগুলি শিশুটিকে ভাসিয়ে রাখার ফলে সেগুলি।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/05/IMG-20220529-WA0008.jpg)
তারফলে শিশুটি জলের মধ্যে অনায়াসে হাত-পা ছুঁড়ছিল। জানা গেছে সেই মতই শুভশ্রীর মা শুভশ্রীকে পুকুরের কিছুটা গভীর অংশে নামিয়ে নিজে হাঁটু জলে দাঁড়িয়েছিলেন। শিশুটি যখন সাঁতার কাটতে ব্যস্ত ওই সময় শিশুটির বাবা পুকুরের পাড়ে থাকা একটি আমগাছে উঠে গিয়েছিলেন আম পাড়ার জন্য।
এদিকে সম্ভবতঃ শুভশ্রীর শরীরের সঙ্গে বাঁধা কাপড়টি ঠিকঠাক বাঁধা না হওয়ায় জলের সংস্পর্ষে এসে তা আলগা হয়ে যায়। শুভশ্রী হাত-পা ছুঁড়তে থাকায় ক্রমশ তা শরীর থেকে খসে পড়ে এবং শিশুকন্যা জলে তলিয়ে যায়। শিশুটিকে জলে তলিয়ে যেতে দেখে তাঁর বাবাকে চিৎকার করে ডাকতে থাকেন মা। বাবা গাছ থেকে নেমে আসতে আসতে মা অবশ্য জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে শুভশ্রীকে পুকুরের তলদেশ থেকে তুলে আনেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রাও। সবাই মিলে দ্রুত শুভশ্রীকে মহিষাদল বাসুলিয়া গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। শিশুটির বাবা চন্দন মান্না বলেন সাঁতার শেখার সময় দুর্ঘটনা ঘটে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই উদ্ধার করা গেলেও শেষ পর্যন্ত কন্যাকে বাঁচানো যায়নি।
পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ” এটা আমরাও জেনেছি যে ঠান্ডাপানীয়ের বোতলকে লাইভ জ্যাকেট হিসাবে ব্যবহার করে শিশুকন্যাটিকে সাঁতার শেখানো হচ্ছিল। আমি জানিনা এই পদ্ধতি ওনারা ইউটিউব থেকে শিখেছিলেন কিনা কিন্তু আমাদের সবারই এটা মনে রাখতে হবে যে জীবনমরনের সমস্যা আছে এমন জায়গায় ইউটিউব বা অন্য কোনও জায়গা থেকে কোনও নতুন পদ্ধতি অবলম্বন না করাই ভালো। কোনও বিপজ্জনক খেলা, জল এবং আগুনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে দক্ষ এবং অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াটা খুবই জরুরি।”