Saturday, July 27, 2024

Medinipore: তরুণীর হবু বরকে নোংরা ছবি পাঠিয়ে গ্রেফতার মেদিনীপুরের তৃনমূলের ‘সাংস্কৃতিক’ ছাত্র নেতা! বাজেয়াপ্ত মোবাইল, পেনড্রাইভ

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃনমূলের ছাত্র নেতা তাও আবার সাংস্কৃতিক! তাই তাঁর বিরুদ্ধে অপ-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নিতেই চায়নি পুলিশ। বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী আর আদালতের নির্দেশেই শেষ অবধি নেতাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল পুলিশ। রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে বিরোধীরা যে শাসকদল পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন সেই অভিযোগই আরও একবার উঠে আসল এক অসহায় তরুনীর আদালতে দাখিল করা বয়ানে। সেই বয়ানে যাওয়ার আগে জেনে নেওয়া যাক তৃনমূলের সেই সংস্কৃতিবান কীর্তিমান নেতার নাম পরিচয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে । ধৃতের নাম সুকীর্তি মণ্ডল। বাড়ি মহিষাদল থানার গোপালপুর গ্রামে। ভাবা যায়! নামেও সুকীর্তি তিনি!

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

তরুণী জানিয়েছেন, এক সময়ে মহিষাদল রাজ কলেজে ভূগোল অনার্স পড়তেন তিনি। ২০২১ সালে তাঁর পরিচয় হয় মহিষাদল রাজ কলেজে ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক শাখার সম্পাদক সুকীর্তির সাথে। ধীরে ধীরে তাঁর ভালোবাসার মানুষ হয়ে ওঠে সুকীর্তি। স্বল্প বয়স আর প্রথম ভালোবাসা আবেগকে কাজে লাগিয়ে সুকীর্তি তাঁদের বেশকিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি তুলে রাখে নিজের মোবাইলে। কিছু ছিল তরুণীর মোবাইলে যা কিনা পরে সুকীর্তি নিয়ে নেয়। তরুণী বলেন, ওই বছরের শেষেই মোহভঙ্গ হয় তাঁর। জানতে পারেন তিনি একা নন এরকম আরও কয়েক জনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সুকীর্তি। এরপরই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। সুকীর্তি কাছ থেকে ছবিগুলি ফেরৎ চান তিনি। কিন্তু কীর্তিমান সুকীর্তি আসল সাংস্কৃতিক রূপ বেরিয়ে আসে এইবার।

শুরু হয় সুকীর্তির নোংরা প্রতিহিংসার খেলা। সম্পর্ক ছেড়ে দিলে তার সমস্ত ছবি সোশ্যাল মাধ্যমমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে প্রথমে হুমকি দেওয়া হয় তরুণীকে। তারপর নমুনা স্বরূপ ছবির একটি করে সেট পাঠিয়ে দেওয়া হয় তরুণীর তিন বান্ধবীর কাছে। আরও একটি সেট পাঠানো হয় তরুণীর কলেজ শিক্ষিকাকে। এখানেও শেষ নয়, এরপর তরুণীর মায়ের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তাঁকে পাঠানো সেই ছবির একটি সেট। এমনকী, বাড়ির সামনে ছবিসহ লিফলেট ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে দেয়।

ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়ে ওই তরুণী ও তাঁর পরিবার। ইতিমধ্যেই তরুণীর নামে ফেসবুকে একটি ফেক আ্যকাউন্ট খুলে সেখানেও আপলোড করা হতে থাকে বিভিন্ন ছবি। এই অবস্থায় সুর্কীতির হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে বাড়ির লোকজন ওই ছাত্রীর অন্যত্র বিয়ে পাকা করে ফেলেন। কিন্তু ধৃত যুবক সেই পরিবারের ঠিকানা ও হবু বরের ফোন নম্বরও জোগাড় করে ফেলে। সেখানেও হবু শ্বশুরবাড়ির সামনে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বেশকিছু লিফলেট ছড়িয়ে দেয়। বেনামে ব্যবহার করা সিমকার্ড থেকে তরুণীর হবু স্বামীর কাছে পাঠানো হয় কিছু আপত্তিকর ছবি।

তরুণী আদালতকে জানিয়েছেন, এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে তিনি ও তাঁর পরিবার মহিষাদল থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিন্তু থানার তরফে জানানো হয় আদালতের নির্দেশ আনতে। সেই নির্দেশ পেলেই নাকি থানা ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারবে। গত ২৯শে জানুয়ারি থেকে মে মাস অবধি টানা এই ঘটনাগুলি চলার পর মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুর মুখ্য দায়রা বিচারকের দ্বারস্থ হন তরুণী।

আদালত বিষয়টি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তমলুক সাইবার ক্রাইম বিভাগকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সাইবার পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দেয়। প্রায় মাস খানেক ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে অনুসন্ধান চালানোর পর দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করা হয় ওই নেতাকে। সাইবার ক্রাইম শাখা জানিয়েছে আগামী ২১ শে জুন অবধি পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সুকীর্তি মন্ডলকে। মোবাইল, পেনড্রাইভ, সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মহিষাদলের তৃনমূল নেতা তথা বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, ওই যুবক কলেজে ছাত্র সংসদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যদি সে অপরাধ করে থাকে তবে তার নিশ্চিত শাস্তি হবে।

- Advertisement -
Latest news
Related news