Saturday, July 27, 2024

Student Credit Card: ঘুরে ঘুরে জুতো ক্ষয়েছে, মেলেনি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ঋণ! পশ্চিম মেদিনীপুরে নার্সিং ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: সরকারের তরফে জোরালো প্রচার করা হচ্ছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট নিয়ে। প্রচারের বহর দেখলে মনে হবে ক্রেডিট কার্ড স্রেফ হাতের মোয়া, চাইলেই মেলে। কিন্তু বাস্তবটা যে কত কঠিন তা বুঝলেন পশ্চিম মেদিনীপুরে চন্দ্রকোনা পুর এলাকার তিথি দোলাই। তফসিলি জাতি ভুক্ত পরিবারের কন্যা তিথি স্বপ্ন দেখেছিল নার্সিং পড়ে বাবা-মার দারিদ্র্যের সংসারে একটু সুরাহা হবে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
তিথি

আর সেই স্বপ্নের উড়ানের ডানা করেছিল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডকে। কিন্তু বাস্তব বড় নির্মম। প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তা থেকে শুরু করে বারংবার কড়া নেড়েছিল ব্যাঙ্কের দুয়ারে দুয়ারে কিন্তু কাজ হয়নি কিছু। মাঝখান থেকে গেলে গেছে চেয়ে চিনতে, ধার করে ভর্তির জন্য দেওয়া ১লক্ষ টাকা। নার্সিং কলেজ বলে দিয়েছে বাকি টাকা না মেটালে পড়া বন্ধ। স্বপ্ন ভেঙে চৌচির! হতাশ, অবসাদগ্রস্থ তিথি শেষ অবধি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। রবিবার রাতের এই মর্মান্তিক ঘটনার পর কেটে গেছে ৪৮ ঘন্টা। জানা গেছে এখনও বিপদমুক্ত নয় ১৯ বছরের তরুণী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে চন্দ্রকোনা পৌরসভার ১২ নাম্বার ওয়ার্ডের ভেয়েরবাজার এলাকার জয়দেব দোলই ও রিঙ্কু দোলই এর একমাত্র মেয়ে তিথি শুরু থেকেই মেধাবী ছাত্রী। বাবা-মা দিনমজুরি করে মেয়েকে পড়াশুনা করিয়েছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার বাবা-মা পড়াতে পারবেননা। কিন্তু তিথির জেদ সে নার্সিং পড়বেই। ব্যাঙ্গালুরুর একটি নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়। জানাযায় তিথি নার্সিং কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় তার পড়া কমপ্লিট করতে খরচ পড়বে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।

মেয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা

বাবা-মা ধার দেনা ও এলাকাবাসীর সাহায্য নিয়ে এক লক্ষ টাকা জমা দিয়ে কলেজে ক্লাস শুরু করে। ছ’মাস পরে বকেয়া টাকা চায় এবং জানিয়ে দেয় ওই টাকা না দিলে সেপ্টেম্বর মাসের ২তারিখ থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা দিতে পারবেনা সে।

তিথির মা রিঙ্কু দোলই বলেন” ক্রেডিট কার্ডের জন্য তিথি ব্যাঙ্গালুরু থেকে বাড়ি চলে আসে। তারপর নবান্ন থেকে শুরু করে বিকাশ ভবন একাধিকবার যাওয়া আসা করেছে। একটার পর একটা ব্যাঙ্ক ঘুরছে। শেষ অবধি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্মরণাপন্ন হয় সে। প্রথম দিকে আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু করে শেষ অবধি গত শনিবার ব্যাঙ্ক জানিয়ে দেয় যে তারা ঋণ দিতে পারবেনা। এরপরই ভেঙে পড়েছিল আমার মেয়ে। ব্যাঙ্গালুরু থেকে বন্ধুরা বারবার ফোন করছিল কবে যাবে জিজ্ঞাসা করে। আর চাপ নিতে পারছিলনা মেয়েটা। তারপরই এই কান্ড করে বসে।”

তিথির প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাকে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পরই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত তিথি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। রবিবার রাতে তিথি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করা চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবারের সদস্যরা, দ্রুত তাকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তিথিকে। এলাকার মানুষের দাবি যেখানে সরকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে সেখানে কেন ছাত্রছাত্রীরা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পাবে না? মুখ্যমন্ত্রী অনেকবারই বলেছেন ব্যাঙ্কগুলি সহযোগিতা করছেনা। প্রশ্ন হল সেক্ষেত্রে সরকার কী কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে? ওই ব্যাঙ্কটির ম্যানেজার সান্টু কুমারের বক্তব্য, তথ্য সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি থাকার জন্যই তাকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট পরিষেবাটি দেওয়া হয়নি।

- Advertisement -
Latest news
Related news