Saturday, July 27, 2024

Tragic death: জাওয়াদে আলুর জমিতে জল, জমা জল নিয়ে স্ত্রীর সাথে বচসা কলহ, মদের সাথে বিষ! নীলকন্ঠ হওয়া হলনা চন্দ্রকোনার ভোলানাথের

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: গরল পান করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব। তারপর পার্বতীর অমৃতসুধা পানে বিষকে হারিয়ে নীলকন্ঠ হয়েছিলেন ভোলানাথ। কিন্তু চন্দ্রকোনার ভোলানাথ নীলকন্ঠ হতে পারলেননা, বরং মদের সঙ্গে কীটনাশক পান করে মৃত্যুকে আরও তরান্বিত করলেন চন্দ্রকোনার ভোলানাথ।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
হাসপাতালে স্ত্রীর সাথে ভোলানাথ, সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন

জানা গেছে জাওয়াদের জেরে নিম্নচাপের ভারি বৃষ্টিতে আলু জমিতে জমে যাওয়া জল বের করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসার জেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ভোলানাথ বায়েন। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কাল হল মদ। মদের জন্যই শরীরময় দ্রুত ছড়িয়ে বিষ। আর সেই কারণে সুস্থ হয়েও সুস্থ হলেননা তিনি।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানার কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যঝাটি গ্রামের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত কৃষকের নাম ভোলানাথ বায়েন। সোমবার সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করেছিলেন ৪৭ বছর বয়সী ভোলানাথ, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ধান্যঝাটি গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ বায়েন চাষ করেছিলেন এক বিঘা আলু, যার খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ হাজার টাকা। তাঁর পরিবারের লোকেরা জানান এই টাকা চড়া সুদে ঋণ করেছিলেন তিনি। আশা ছিল আলু তোলার পর ঋণ মিটিয়ে দেবেন। এদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ঝড় না হলেও তিনদিন ধরে নিম্নচাপ হয়ে অবিরাম বৃষ্টি হয়ে ঝরেছে। ফলে ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, কেশপুর থেকে সর্বত্রই জমিতে জল জমেছে। দিন দশেক আগে ভোলানাথ আলু লাগিয়েছিলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক ছিল পরিবারে। চাপের মধ্যেই ছিলেন ওই কৃষক।

পরিজনদের সূত্রে জানা গেছে ভোলানাথের স্ত্রী তাঁকে জমি থেকে জল বের করে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন কিন্তু প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ায় ভোলানাথ পরের দিন জল বের করতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে বচসা শুরু হয় ২জনের মধ্যে। প্রবল কথা কাটাকাটিও চলে। ঘটনার সময় মদ্যপ ছিলেন ভোলানাথ। সোমবার সন্ধ্যায় আলুর জন্যই বাড়িতে মজুদ রাখা কীটনাশক পান করেন তিনি। কীটনাশক খেয়ে প্রথমে চুপচাপ ছিলেন। এরপর মুখ দিয়ে গাঁজলা উঠতেই বাড়ির লোক বিষয়টি বুঝতে পারে। রাতে তড়িঘড়ি চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাথে সাথেই চিকিৎসা শুরু করেন। ওয়াশ করে বের করে দেওয়া হয় পেটের যাবতীয় কিছু। প্রথম দিকে কিছুটা সুস্থও লক্ষ্য করা যায়। উঠে বসেন, স্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। অনুতপ্তও হন রাগের বশে এই ঘটনা ঘটানোর জন্য। স্যালাইন চলছিল, কিন্তু রাত বাড়ার সাথে সাথে অবস্থার অবনতি শুরু হয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে মারা যান। চিকিৎসকদের অনুমান অনেকটাই বিষ গলায় ঢেলে নিয়েছিলেন ভোলানাথ। আর আগে থেকেই পেটে মদ থাকায় আ্যলকোহলের প্রভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বিষক্রিয়া। যা ক্ষতি করে ফেলে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলিকে।

পরিবারের সদস্যরা।তবুও শেষ রক্ষা হয়নি,মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় তার।যদিও মৃত কৃষকের এক আত্মীয়ের কথায়,জমিতে জল কাটানো নিয়ে স্বামী স্ত্রীর অশান্তি তো হয়েছিল,কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় থাকায় বিষ খেয়ে নেয় বলে জানান।এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।যদিও পুলিশ এখনই মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাইনি,তদন্ত করে কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়।

- Advertisement -
Latest news
Related news