নিজস্ব সংবাদদাতা: নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মারা হল একটি সুস্থ কুকুরকে। মেরে মেরে চোখ ফেটে বেরিয়ে আসার পরও রেহাই দেওয়া হয়নি পশুটিকে। তারপরও পিটিয়ে পিটিয়ে মেরা ফেলা হয় সবার চোখের সামনে। রবিবার সকাল বেলায় এই ঘটনার খবর পেয়েই মেদিনীপুর শহর থেকে ছুটে যায় পশুপ্রেমীদের একটি দল।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/01/IMG-20220116-WA0028.jpg)
২মহিলা সহ ওই পশুপ্রেমী দলটিকেও ব্যাপক হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি তাঁদের বেঁধে রেখে পেটোনোর হুমকি দেওয়া হতে থাকে। ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। কার্যত পুলিশের ঘেরাটোপেই এলাকা ছাড়তে সক্ষম হন ওই পশুপ্রেমী দলটি। ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহর লাগোয়া কেরানীচটিতে।
মেদিনীপুরের বিশিষ্ট পশুপ্রেমী শিবু রানা জানিয়েছেন, ‘সকাল ১০টা নাগাদ স্থানীয় সূত্রে আমরা খবর পাই একটি কুকুরকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারছে ২ব্যক্তি। সেই ঘটনার ভিডিও এসে পৌঁছায় আমাদের কাছে। এরপর আমরা চারজনের একটি দল সেখানে পৌছাই।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/01/IMG-20220116-WA0030.jpg)
আমি ছাড়াও ছিলেন ঋক চৌধুরী, রিমা কর্মকার ও মৌমিতা জোয়ারদার কেরানীচটিতে পৌঁছাই। যে দুজন মূলত ওই কুকুরকে মারে তাঁরা প্রথমে বলে যে, কুকুরটি পাগল হয়ে গেছিল এবং অনেককে কামড়ে ছিল তাই পিটিয়ে মেরেছি। কাদের কামড়েছে জানতে চাওয়া হলে যারা প্রথমে বলেছিল স্থানীয় লোককে কামড়েছিল তারা এবার বলে বাইরের ২জনকে কামড়েছিল। তারা এখানে নেই।’
পশুপ্রেমী ঋক চৌধুরী জানান, ‘আমরা স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কুকুরটি কাউকেই কামড়ায় নি। তাছাড়া গত ৬মাসের মধ্যে ওই এলাকায় কুকুর কামড়ানোর ঘটনাই ঘটেনি। ৬মাস আগে একটি কুকুর কয়েকজনকে কামড়েছিল তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। তারপর এখানকার কাউকেই কুকুর কামড়ায়নি বলে স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন।’ পশুপ্রেমী দলটির এক সদস্য জানান, আমরা জানতে পেরেছি এই কুকুরটি এখানকার একটি ফলওয়ালার বেড়ালকে কামড়ে ছিল কিন্তু সে বেড়ালটাও বর্তমানে ভালো রয়েছে। তখন থেকেই ওরা কুকুরটিকে পিটিয়ে মারার পরিকল্পনা করে।
আজ সকালবেলায় কুকুরটি যখন বাজারের ভেতরের দিকে ছিল তখন এক ব্যক্তি হঠাৎ একটি বাঁশ নিয়ে তার কোমরে মারে। কুকুরটি পড়ে গেলে তাকে পেটাতে পেটাতে আধমরা করে দেয়। তারপরও কুকুরটি জনবহুল রাস্তায় উঠে আসে মানুষের সাহায্য পাওয়ার আশায়। এরপরই ওই ফলওয়ালা আসরে উত্তীর্ণ হয়। আধমরা কুকুরটিকে আরও পিটিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে। মারের চোটে মুখ ফেটে কুকুটির চোখ বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার পরও রেহাই দেয়নি ওরা। পশুপ্রেমীদের অভিযোগ, ‘যখন ওরা বুঝতে পারে যে ওদের মিথ্যা ধরা পড়ে গেছে তখনই ওরা আসল মূর্তি ধরে এবং বলে বেশ করেছি মেরেছি।’
পশুপ্রেমী দলটির অভিযোগ স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের বিরুদ্ধে আরও ক্ষেপিয়ে তোলেন স্থানীয়দের একটি অংশকে। এরপরই ওই ফলওয়ালা এবং অন্য যে ব্যক্তি কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরেছিল আমাদের ঘিরে ধরে। ঠেলাঠেলি, গায়ে ধাক্কা দিতে থাকে। হুমকি দেয় আমাদের বেঁধে পেটানো হবে বলে। তখন আমরা পুলিশকে ফোন করি। পুলিশ আসার পরে কোনও রকমে এলাকা ছাড়ি।