নিজস্ব সংবাদদাতা: বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই নিজের জমিতে লাগানো একাধিক গাছ কাটায় অভিযান চালালো বনদপ্তর ও পুলিশ। গ্রেফতার করা হল ২জনকে। পুলিশ ২টি মোটর বাইক ছাড়াও গাছ কাটার করাত, কুড়াল ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানা এলাকার মাংরুল গ্রামপঞ্চায়েতের মাংরুল গ্রামে। ডবনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যেখান থেকে গাছগুলি কাটা হচ্ছিল সেই জায়গাটি ওই ব্যক্তির রায়ত জায়গা হলেও এক সঙ্গে এত গাছ কাটার আগে বনদপ্তরের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল যা ওই ব্যক্তি নেননি তাই অভিযান চালিয়েছেন তাঁরা। বনদপ্তর আরও জানিয়েছেন সাম্প্রতিক নিয়মে বলা হয়েছে পঞ্চায়েত, স্কুল বা সরকারি কোনও জায়গায় লাগানো গাছ বনদফতরের অনুমতি ছাড়া কাটাই যাবেনা। আর ব্যক্তিগত গাছ ৩টি অবধি বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কাটা যেতে পারে তার অধিক গাছ কাটতে গেলে বনদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। ওই ব্যক্তি ৪০ থেকে ৫০টি গাছ কাটছিলেন।
জানা গেছে মাংরুল গ্রামের ধীরেন মন্ডল নামে এক ব্যক্তি তার ৫ বিঘে পুকুরপাড়ে লাগিয়েছিলেন একাধিক নামি দামি গাছ, বেশ কয়েকদিন ধরেই সেই কাজ প্রশাসনের বৈধ অনুমতি ছাড়াই কেটে বিক্রি করা হচ্ছিল, গোপন সুত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বনদপ্তর আধিকারিকরা ও রামজীবনপুর ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা। পুলিশ গিয়ে বেআইনিভাবে গাছ কাটার অপরাধে দুই করাতিকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁদেরমোটরবাইক ও গাছ কাটা সরঞ্জাম। পালিয়ে যান গাছের মালিক।
এ বিষয়ে ঘাটালের রেঞ্জার অসিতবরণ মুখার্জি বলেন বৈধ অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হচ্ছিল দুইজনকে আটক করা হয়েছে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গাছকাটার সরঞ্জাম। অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য গত মার্চ মাসে গড়বেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত কড়াসিয়া গ্রামে স্থানীয় প্রধান ও শাসকদল অনুগত কিছু ব্যক্তি বেআইনি ভাবে বনদপ্তরের প্রচুর গাছ কেটে ফেলেন। তারপরই শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে নির্দেশ দেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার। গ্রেফতার হন প্রধান সহ একাধিক হোমড়াচোমড়া ব্যক্তি। গড়বেতা ছাড়াও বিভিন্ন থানা এলাকায় বেআইনি ভাবে গাছ কাটার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ এখনও অবধি প্রায় ২৫জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, স্কুল এবং সরকারি দপ্তর নিজের জায়গার গাছও কাটতে পারবেনা বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়া। একমাত্র রায়ত জায়গার গাছ জায়গার মালিক কাটতে পারেন। কিন্তু সেই গাছও এক সাথে তিনের অধিক হবেনা।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই কেউই সূর্য ডোবার পর সূর্য ডোবার আগে গাছ কাটতে বা পরিবহন করতে পারবেননা। তাছাড়া বন আইন অনুযায়ী ১৬ই জুন থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বর সবরকমের গাছ কাটা নিষিদ্ধ। এদিকে কাঠ ব্যবসায়ীরা বন আইন সরলীকরনের জন্য যে আন্দোলন করছেন সে নিয়ে বনদপ্তর জানিয়েছে আগে জ্বালানি কাঠ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য যে টিপি বা ট্রানজিট পারমিট লাগত তা এখন লাগেনা। ওই বন আধিকারিক আরও জানিয়েছেন গত ১০ বছর যাবৎ পঞ্চায়েতের উদ্যোগে অথবা প্রশ্রয়ে প্রচুর পরিমান গাছ লুট হয়েছে তা অনুভব করেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বনদপ্তর এই কড়াকড়ি শুরু করেছে। আগেও এইসব নিয়ম ছিল কিন্তু বর্তমানে নিয়ম ভাঙার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়াতেই এই উদ্যোগ।