নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার ১০ই নভেম্বর নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস উদযাপনের মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্যে কুৎসিত ও কদর্য মন্তব্য করেছিলেন তৃনমূলের রাজ্য কমিটির মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর জন্মের ঠিক রয়েছে কিনা ইত্যাদি নানাপ্রসঙ্গ। বৃহস্পতিবার সেই কুরুচিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা বিচারক শিবম মিশ্রের এজলাসে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে। মানহানির (Deformation) এই মামলায় এদিনই কুনাল ঘোষের বিরুদ্ধে সমনও জারি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অধিকারী পরিবারের আইনজীবী অনির্বান চক্রবর্তী।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মিশ্রের এজাহারের পর মামলাটি গ্রহণ ও সমন তৈরির প্রক্রিয়ার পর এজলাসের বাইরে এসে আইনজীবী চক্রবর্তী জানান, ‘ গতকাল নন্দীগ্রামে প্রকাশ্যসভায় মাইক নিয়ে কুনাল ঘোষ শ্রী অধিকারীকে বেজন্মা, জন্মের ঠিক নেই, মীরজাফর, বিভীষণ ইত্যাদি ভাষা প্রয়োগ করেছেন। পাশাপাশি ঘোষ শ্রী অধিকারীকে ল্যাজ নাড়া জন্তু ইত্যাদি নানা কুকথা বলেছেন যাতে আমার মক্কেল ও তার পরিবারের সম্মানহানি হয়েছে তাই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।’ আদালতের আবেদনের সঙ্গে সৌম্যেন্দু স্বাক্ষ্য হিসাবে ৪ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। সৌম্যেন্দু জানিয়েছেন তিনি গোটা বক্তব্য শুনেছেন একটি সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলে।
এদিকে তিনি যা বলেছেন তা ঠিকই বলেছেন বলে দাবি করেছেন কুনাল ঘোষ। এদিন ত্রিপুরা যাওয়ার পথে ঘোষকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। কুনাল ঘোষ জানান, আমি যা বলেছি ঠিকই বলেছি। হয়ত আমি একটু কড়া করে বলেছি কিন্তু যা ঘটনা তাই বলেছি। উনি ( শুভেন্দু আধিকারী ) একজন সুবিধাবাদী দলবদলু, তৃনমূল থেকে সবকিছু সুবিধা নিয়েছেন। উনি অকৃতজ্ঞ, বেইমান, সুবিধাবাদী, পাল্টিবাজ, গিরগিটি। ওর ভাই যদি কোনো মামলা করে থাকেন তবে আইন আইনের পথে চলবে। কুনাল এও বলেন যে, বিচারপতিও বাঙালি, সচতেন নাগরিক কারা তৃনমূলকে ব্যবহার করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যবহার করে সব পদ পাওয়ার পরও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তা সমগ্র বাঙালি জানে?
আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন কুনাল ঘোষ কী তবে বিচারপতিকেও প্রভাবিত করতে চাইলেন? তিনি বাঙালি, তিনি সচেতন নাগরিক বলার মানে টা কী? মামলা হয়েছে মানহানির। আদালতের দেখার বিষয় মানহানিকর কিছু হয়েছে কীনা? কে দলবদল করল, কেন করল তা আদালতের দেখার কোনও প্রশ্ন নেই। কেউ দলবদল করলেই তাঁকে যা ইচ্ছা তাই বলা যায় নাকি!