শশাঙ্ক প্রধানঃ বিধানসভা কিংবা জরুরি কাজ না থাকলে নিয়ম করে শনিবার কলকাতা থেকে চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরাতে। আগে থেকে পরিকল্পনা মতই একেকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা মিটিং ইত্যাদি করেন। এদিনও সেই মত সকালে ডেবরা এসে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন কারিগরী শিক্ষা মন্ত্রী তথা ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দিনভর মিটিং সেরে ডেবরায় নিজের বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক। জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে রাত আটটা নাগাদ। তাঁর দেহরক্ষীরা তাঁকে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করে দেন চিকিৎসকরা। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। তারপরই তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিধায়কের অবস্থা বতর্মানে স্থিতিশীল।
ডেবরার তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি বিবেকানন্দ মুখোাধ্যায় জানিয়েছেন, “ওনার দেহরক্ষীরা আমাকে ফোন করে তাঁর অসুস্থতার খবর জানালে আমি তাঁদের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। পাশাপাশি স্থানীয় কর্মীদের বলা হয় ওঁর কাছে পৌঁছাতে। এরপরই কর্মীরাও পৌঁছে যায় কবীরের বাসভবনে। দলীয় কর্মীরাই হুমায়ুনকে ডেবরা হাসপাতালে ভর্তি করেন।” ডেবরা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পানীয়জল কিংবা কোনও খাবার থেকে সমস্যা হয়েছে। সেই দিকটা সামলে ওঠার পরই তাঁকে এসএসকেএম-এ স্থানান্তরিত করা হয়। কারন তাঁর শ্বাসকষ্ট থাকায় কোনও ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তিনি
চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার পদে ছিলেন। ওই সময় তাঁর চাকরির মেয়াদ ছিল ২ মাস। ভোটের জন্য তাঁকে চন্দননগর থেকে সরিয়ে দিলে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেন। প্রথমবার ভোটে জয়ী হয়েই স্বাধীন মন্ত্রীত্ব প্রদান করেন। কিন্তু ডেবরা টোলপ্লাজা, টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া, এক আদিবাসী কন্যাকে হেনস্থা ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পড়েন। অভিযোগ দায়ের হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। পরের বার মন্ত্রীসভা রদবদলের সময় মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।