নিজস্ব সংবাদদাতা: সাত দিনও পের হলনা বিজেপি নেতা খুনের অভিযোগে তৃনমূল নেতার গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনার তারই মধ্যে ফের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুরেই এক বিজেপি নেতাকে নৃশংস ভাবে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে নিহত ব্যক্তির নাম ভাস্কর বেরা (৪৫) ভগবান ২ নম্বর ব্লকের ভুপতিনগর থানার বাসুদেব বেড়িয়া এলাকায় দক্ষিণ বড়বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে শনিবার রাতে স্থানীয় একটি পুজোয় তাঁকে শেষ বারের মত দেখা গিয়েছিল। এরপর রবিবার ভোরের দিকে এলাকার রাস্তাতেই তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিজেপির তরফে অভিযোগ তৃনমূলের দুষ্কৃতিরাই পিটিয়ে খুন করেছে ওই বিজেপি নেতাকে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃনমূল। ভগবানপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দাস দাবি, ‘‘ওই ব্যক্তিকে গত কাল মত্ত অবস্থায় পুজো মণ্ডপে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। ওই এলাকায় কোনও রাজনৈতিক অশান্তি নেই। কী ভবে ঘটনাটি ঘটল, তা পুলিশ তদন্ত করলেই জানা যাবে।’’
অবশ্য এর আগেও ঠিক এরকমই দাবি করেছিলেন অভিজিৎ দাস। ভাইফোঁটার দিন রাতের অন্ধকারে মহম্মদপুরের বিজেপি নেতা চন্দন মাইতিকে পিটিয়ে কুপিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তখনও দাস বলেছিলেন ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ যুক্ত নয়। কিন্তু পরে ঘটনার মূল অভিযুক্ত ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা তাপস দলপতিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ এও দাবি করেছে তাপস দলপতি সেই খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। ১৪দিনের জন্য দলপতিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তারই মধ্যে আবারও এক বিজেপি নেতা খুনের অভিযোগ উঠল।
বিজেপির দাবি ভাস্কর বেরাকে শনিবার মধ্য রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এরপর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। এই অবস্থায় রবিবার ভোর রাতের দিকে গুরুতর জখম অবস্থায় রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রক্তে ভেসে যাচ্ছিল গোটা শরীর। ভাস্করের গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্নও ছিল। বিশেষ করে তাঁর পা দুটো যেন গুঁড়িয়ে গেছে। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানেই ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সহকর্মীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা মরদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। উল্লেখ্য ভাইফোঁটার দিনে সেই চন্দন মাইতির স্মরণসভায় শনিবারই পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি নেতা খুনের ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি কর্মীদের দাবি, ভগবানপুর বিধানসভা তৃনমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকেই বিজেপি কর্মীদের ওপর কী ধরনের হিংস্র আক্রমন নামিয়ে আনা হচ্ছে পরপর ২টি খুন তারই নিদর্শন।