Saturday, July 27, 2024

Bengal Poets Protest: বাংলা আকাদেমির মুখ্যমন্ত্রী চাটুকার বৃত্তি! পুরস্কার ফেরালেন রত্না, পদত্যাগ অনাদির

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলার সাহিত্য জগতকে স্তব্ধ করে দিয়ে বাংলা সাহিত্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বাংলা আকাদেমি’ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পুরস্কার দেওয়া হয়েছে  বাংলা আকাদেমির তরফে। বহুদিন ধরেই বাংলা আকাদেমিকে সরকারি কব্জায় নেওয়ায় ফুঁসছিলেন বাংলার সাহিত্য জগতের মানুষরা। একজন মন্ত্রী কি করে আকাদেমির সভাপতি হন তাই নিয়ে জল্পনা রয়েছে প্রবল। যদিও মন্ত্রী ও বাংলা আকাদেমির সভাপতি ব্রাত্য বসু এতে অন্যায় কিছু আছে বলে মনে করেননা। বাংলা সাহিত্যিকদের একটি অংশের মতে, আকাদেমির এই চাটুকারবৃত্তির সর্বোচ্চ পরিণতিই হল ‘নিরলস সাহিত্য সাধনা’র জন্য  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বিশেষ সম্মান প্রদান।  তারই তীব্র প্রতিবাদ জানালেন লোকসংস্কৃতি গবেষিকা ও সাহিত্যিক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় (Ratna Rashid Banerjee)।  ২০১৯ সালে বাংলা আকাদেমি থেকে পাওয়া ‘অন্নদাশঙ্কর রায় সম্মান’ ফিরিয়ে দিলেন। বাংলা আকাদেমির সভাপতিকে চিঠি লিখে সেই কথা জানিয়েছেন রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে ওই সম্মান প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়ে আকাদেমির উপদেষ্টা মন্ডলী থেকে পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন  বিশিষ্ট কবি অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

বাংলা আকাদেমিকে লেখা একটি চিঠিতে রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন,  “মুখ্যমন্ত্রীকে এই পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি শুধুমাত্র একটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের সত্যিকারের নিরলস চর্চায় রত সমস্ত মানুষকে অপমানিত করেছে। এই অবস্থায় ২০১৯ সালে এই সরকারের আমাকে দেওয়া সম্মান আমার কাছে কাঁটার মুকুটের মত প্রতীয়মান হচ্ছে। আমি এই চিঠির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই আমাকে দেওয়া অন্নদা শঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি।” উল্লেখ্য চলতি সরকারের আমলেই ২০১৯ সালে ২৬ জুলাই বাংলা আকাদেমির তরফে অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রত্না চিঠিতে লিখেছেন, ‘অন্নদা শঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি।’ অতি দ্রুত ওই সম্মানের সঙ্গে দেওয়া স্মারকও  বাংলা আকাদেমির কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন এই প্রবীণ লোকসাহিত্য গবেষক। উল্লেখ্য বাম আমলেও ২০০৯ সালে বাংলা আকাদেমি পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই লেখিকা। সেই পুরস্কার অবশ্য তিনি রাখছেন। শুধু ২০১৯ সালের স্মারক সম্মানই ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিছেন রত্না।

অন্যদিকে, ২৫শে বৈশাখের মত একটি দিনে যা হয়েছে তা বাংলা সাহিত্য জগতের লজ্জা মনে করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া পুরস্কারের প্রতিবাদ জানিয়ে সাহিত্য আকাদেমির বাংলা অ্যাডভাইজারি বোর্ডের অন্যতম সদস্য অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। এই বোর্ডের আঞ্চলিক সম্পাদককে লেখা চিঠিতে তিনি জানান, এবছরের পঁচিশে বৈশাখ যে ঘটনা ঘটেছে তা বাংলা কবিতা জগতে অপমানের। সেই কারণে সাহিত্য অকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লেখক এবং সম্পাদক অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস। বিবৃতি প্রকাশ করে অনাদি জানিয়েছেন, কলকাতায় রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর দিন কবিতাকে যে ভাবে অসম্মান করা হয়েছে, তাতে তিনি ‘বিরক্ত’। সেই কারণেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য সোমবার বিকেলে পঁচিশে বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষ্যে সরকারি মঞ্চ থেকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতি ব্রাত্য বসু ওই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এটি আকাদেমির তরফে নতুন চালু করা হল এবং প্রতি তিন বছর অন্তর ওই পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী । পুরস্কারটি দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর ‘কবিতাবিতান’ কাব্যগ্রন্থকে। এই পুরস্কার ঘোষণার পরই পর বিভিন্ন মহলে বিশেষ করে নেট দুনিয়ায় কার্যত ধিক্কার বর্ষিত হয়েছে বাংলা আকাদেমির সভাপতি সহ বর্তমান পরিচালন কমিটির উদ্দেশ্যে যেখানে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুবোধ সরকার, আবুল বাসার, শ্রীজাত ইত্যাদির মত সাহিত্যিকরা রয়েছেন। যে ভাবে বাংলা আকাদেমি এই পুরস্কার ঘোষণা করেছে তার একটা প্রতিবাদ করা দরকার জানিয়ে রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন , ‘‘উনি ( মুখ্যমন্ত্রী) এক জন মান্যগণ্য মানুষ। উনি আমাদের সবার ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ওঁর কাছ থেকে পরিপক্ব সিদ্ধান্ত আশা করি। বইয়ের তো একটা স্ট্যান্ডার্ড (মান) থাকতে হবে। পুরস্কার দিলেই উনি নিয়ে নেবেন কেন!’’

- Advertisement -
Latest news
Related news