শশাঙ্ক প্রধান : ঠিকাদার ছেলের কাজের বিল সময়মত পাশ হচ্ছেনা এই অভিযোগে গ্রামপঞ্চায়েতের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক শাসকদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনায় ওই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন নিগৃহীত ওই কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানা এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত রাধামোহনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। অভিযুক্ত ওই নেতা ডেবরা ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের সহসভাপতি অনুপম দাস। অভিযোগ দাসের সঙ্গে এই মারধরে যুক্ত ছিলেন তাঁর ঠিকাদার ছেলে শুভব্রত দাসও। যদিও অনুপম দাস মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে রাধামোহনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ বা MGNRG প্রকল্পের সরকারি তত্ত্বাবধায়কের কাজ করেন পল্টন মাইতি। তিনি চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী। পল্টন মাইতি জানিয়েছেন অনুপম দাস এবং তাঁর ঠিকাদার ছেলে শুভব্রত এবং আরও দু’জন ঠিকাদারকে নিয়ে সোমবার দুপুর ১২ টা নাগাদ তাঁর কাছে যান এবং কেন তাঁরা ১০০দিনের কাজের বকেয়া টাকা পাচ্ছেননা তার কৈফিয়ত দাবী করেন। পল্টন মাইতি বলেন, ‘ওই টাকা সরকারের কাছ থেকে কোন পদ্ধতিতে পাওয়া যায় এবং ওই পাওনা বর্তমানে কোন স্তরে রয়েছে তা সরকারি ওয়েবসাইট খুলে দেখিয়েও দি। কিন্তু ওই তিনজন ঠিকাদার আমাকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন এবং হঠাৎই অনুপম দাস আমার জামার কলার ধরে চেয়ার থেকে তুলে আমার গলা চেপে ধরে দেওয়ালে ঠেসে ধরেন। এবং চড় থাপড় কিল ঘুঁষি মারতে থাকেন।’
জানা গেছে ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত অন্যান্য কর্মী ও পঞ্চায়েতের কিছু সদস্য। সেই সময় উপস্থিত রাধামোহনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোক সেন এবং মাইতির সহকর্মীরা গিয়ে মাইতিকে উদ্ধার করেন। সহকর্মীরাই পল্টন মাইতিকে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। মঙ্গলবার ডেবরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন পল্টন মাইতি। ওই অভিযোগে পল্টন মাইতি আরও জানিয়েছেন এর আগেও ওই অনুপম দাস বিভিন্ন কর্মীদের হেনস্থা করতেন এমনকি প্রানে মারার ও হুমকি দিয়েছেন। কর্মীরা ভয়ে মুখ খুলতে পারেননা।
ঘটনা অস্বীকার করে অনুপম বাবু জানান, ‘ঠিকাদারদের সঙ্গে পল্টন মাইতির কথা কাটাকাটি চলছিল। সেই কথা কাটাকাটি এমনই উচ্চপর্যায়ে যায় যে হাতাহাতির উপক্রম। তখন আমি আর উপপ্রধান মিলে ওদের কাছে গিয়ে ধাক্কা মেরে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেই। পল্টনকে জোর করে চেয়ারে বসিয়ে দেই। এর বাইরে কিছু হয়নি। পরে দু’পক্ষকেই ডেকে পাঠান বিডিও। সেখানে আমার সঙ্গে পল্টনের করমর্দন করিয়ে দেন। বলেন, নিজেরা মিটিয়ে নিন।’ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে কোনো সিসিটিভি না থাকায় ঘটনার চিত্র মেলেনি। ডেবরা ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাধকান্ত মাইতি বলেন, আমিও ঘটনাটি শুনেছি। যদি সত্যি হয় তবে আইন মোতাবেক নিশ্চই শাস্তি পাবেন। আইনের চোখে তৃনমূল বলে আলাদা ছাড় নেই।”