Saturday, July 27, 2024

Lottery Suicide: লটারিতে ৪০ লক্ষ টাকা পেয়ে সবাইকে চমকে দিতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি পূর্ব মেদিনীপুরের ব্যবসায়ীর! জমি জায়গা খুইয়ে আত্মহত্যা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ওই যে ফোনটা আসে আপনার, আমার, সবার কাছে। সেরকমই একটা ফোন এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের শ্রীকান্ত ওঝার কাছে। ‘আমাদের লটারিতে ৪০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন আপনি। আর এটা পেতে গেলে আপনাকে আয়কর বাবদ দেড় লক্ষ টাকা দিতে হবে।’ সেই দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন শ্রীকান্ত ওঝা। তারপর আরও দেড় লক্ষ, তারপর আরও। ভেবেছিলেন টাকা পেয়ে চমকে দেবেন পরিবারের সবাইকে। মেয়ের বিয়ে, ছেলেকে একটা ব্যবসাও করে দেবেন। তাই বাড়ির কাউকেই কিছু জানাননি। আর এভাবেই গত ৫ বছর ধরে মোট ১৭লক্ষ টাকা দেওয়ার পর বুঝতে পেরেছেন ও টাকা পাওয়ার আশা নেই। যখন বুঝেছেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন ততদিনে চলে গেছে সমস্ত পুঁজি। বাজারে ধারদেনা ছাড়াও চলে গিয়েছে ৭৩ ডেসিমেল জমি। বউ আর ছেলে মেয়েকে পথে বসিয়েছেন বুঝতে পেরে শেষ অবধি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ৫৫ বছরের শ্রীকান্ত ওঝা।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানার মশাগাঁ গ্রামে নিজের বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে লাইলন দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ মিলেছে শ্রীকান্তর। তাঁর একটি স্টেশনারি দোকান ছিল। পুলিশ একটি আত্মহত্যা লিপি বা সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে তাঁর কাছ থেকে। আর সেখান থেকেই প্রকাশ্যে এসেছে সাইবারক্রাইমের এই চিরায়ত প্রতারনা পদ্ধতি। জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে শ্রীকান্তর কাছে বোডাফোন সিম থেকে যার নম্বর ছিল 9733660764। যেখান থেকে তাঁকে প্রথম লটারি জেতার খবর দেওয়া হয়। এরপর কখনও ফোন পে, কখনও গুগুল পে আবার কখনও পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কলকাতার একটি ব্রাঞ্চে টাকা পাঠিয়েছেন তিনি। কবে কোন নম্বরে ফোন পে বা কোন আ্যকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন সেই বিবরণও পুঙ্খাপুঙ্খ বিবরণ ও হিসাব দিয়ে গেছেন শ্রীকান্ত।

পুলিশ জানিয়েছে ওই আত্মহত্যা লিপি থেকে কলকাতার ওই ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চে ১৫জনের আ্যকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ওই ১৫টি আ্যকাউন্ট ও ১৫জন ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। অন্যদিকে প্রায় ১৪টি ফোন নম্বর পাওয়া গেছে যে নম্বরে ফোন পে অথবা গুগুল পে পদ্ধতিতে টাকা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মোট ৮টি ফোন নম্বর পাওয়া গেছে যেখান থেকে ফোন করে টাকার জন্য তাগাদা দেওয়া হত। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই সব তথ্য জোগাড় করে তা পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা ওই সুইসাইড নোটে লিখে রাখা বিবরণ এই তদন্তে বড় সহায়ক হবে।

শ্রীকান্ত তাঁর সুইসাইড নোটে আরও বলে গেছেন, পশ্চিমবঙ্গের আর কোনও মানুষের যেন এমন অবস্থা না হয় এই আবেদন তিনি রেখে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘ওদের প্রতারণা ধরার পর আমি যখন ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলাম তখন ওরা আমাকে বলেছিল, বাংলার বুকে দাঁড়িয়েই আমরা এই কারবার করছি। কেউ আমাদের একটা চুলও সোজা করতে পারবেনা। শ্রীকান্তের সদ্য বিধবা চন্দনা ওঝা জানিয়েছেন, ‘গত ৫ বছর ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে অথচ আমরা কিছুই টের পাইনি। উনি কোনও কথাই আমাদের জানাননি।’

- Advertisement -
Latest news
Related news