নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভায় পার্টির মধ্যে থেকে বিরোধী দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগে ৬ ‘গদ্দার’ এরিয়া কমিটি সদস্যকে বহিষ্কার করল পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিএম জেলা কমিটি। এরই সাথে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগে ৫০ জনের পার্টি সদস্যপদও বাতিল করা হয়েছে। ৪ মাস আগে হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনের পর পার্টির ফলাফল নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার চলছে। বিভিন্ন দিক খতিয়ে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে এসেছে পার্টি এমনটাই জানিয়েছেন জেলা সিপিএমের এক নেতা। গদ্দারির অভিযোগ এসেছে নারায়নগড় থানা এলাকা থেকে। অপর নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বেশির ভাগই দাসপুর এলাকা থেকে। গত ১দশকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম এমন বড়সড় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয়নি বলেই জানা যাচ্ছে।
সিপিএমের একটি সূত্রে জানা গেছে যে ৫০ জনের পার্টি সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে তারা দাসপুর থানার অন্তর্গত দাসপুর এরিয়া কমিটি, সোনাখালি এরিয়া কমিটি ও গোপীগঞ্জ এরিয়া কমিটির আওতায় থাকা বিভিন্ন শাখার সদস্য। এর মধ্যে সর্বাধিক পার্টি মেম্বারশিপ বাতিল করা হয়েছে সোনাখালি এরিয়া কমিটিতে। এখানে ২৬জনের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। গোপীগঞ্জ এরিয়া কমিটির আওতাধীন ব্রাঞ্চগুলির মোট ২৩জনের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে অন্যদিকে দাসপুর এরিয়া কমিটির ৩জনের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ছিল। অর্থাৎ পার্টির রাজনৈতিক কার্যকলাপে এঁরা অংশ নিছিলেননা।
তবে গুরুতর অভিযোগ ছিল দাসপুর ও নারায়নগড় বিধানসভার অধীন ৬ জন এরিয়া কমিটির সদস্যর বিরুদ্ধে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল পার্টির অভ্যন্তরে থেকে বিরোধী প্রার্থীর স্বপক্ষে গোপনে কাজ করার বা বিরোধী প্রার্থীকে (কেউ তৃনমূল কেউ বিজেপি প্রার্থীকে)জেতাতে সাহায্য করা। একদা সূর্য মিশ্রের গড় এই নারায়নগড় (জাহালদা) থেকেই ৫ এরিয়া কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তাঁরা পার্টির বিধানসভা প্রার্থী তাপস সিনহার প্রচারে প্রকাশ্যে অংশ নিয়ে গোপনে কাজ করেছিল বিরোধী প্রার্থীকে। কাজটিকে জঘন্য পার্টি বিরোধী কাজ বলে মনে করে CPM। অপর একজন এরিয়া কমিটির সদস্য হলেন দাসপুরের। অভিযোগের পর তথ্যপ্রমাণাদি সংগ্ৰহ করার পরই এই বহিস্কার বলে জানা গেছে।
শনিবার মেদিনীপুর শহরে জেলা পার্টির বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছিল কৃষক ভবনে। জেলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন এরিয়া কমিটির কনভেনাররা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এদিন বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন CPM রাজ্য কমিটির সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। মিশ্র এই বহিস্কারের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু জানালেও তিনি বলেছেন, ‘আমাদের পার্টিতে ওদের মত যাওয়া আসা নেই। এসব ক্ষেত্রে আমাদের বহিষ্কার করতে ৫মিনিট সময় লাগেনা। আজও আমরা কয়েকজনকে বহিস্কার করেছি।
অভিষেক ব্যানার্জীকে ইডির তলব প্রসঙ্গে মিশ্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ ইডি কাউকে ডাকতেই পারেন তদন্তের জন্য কিন্তু প্রশ্ন হল বেছে বেছে ইডি ডাকছে কেন? এই অভিযোগ তো এখন বিজেপি করছে এরকম অনেকের বিরুদ্ধে রয়েছে। তাঁদের ডাকছেনা কেন?’ অন্যদিকে ভাবনীপুরে কংগ্রেসের প্রার্থী না দেওয়া প্রসঙ্গে মিশ্র বলেছেন, ‘জোট হয় ভোটের সময়, ভোট ফুরোলে জোটের গুরুত্ব কী? কংগ্রেস প্রার্থী দিলে আমরা সমর্থন করতাম। এখন কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি বলে আমরা তো ফাঁকা মাঠ ছেড়ে দিতে পারিনা। তাই প্রার্থী দিয়েছি।