নিজস্ব সংবাদদাতা: ১২ বছর পরে নতুন করে ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সবং এলাকায়। প্রবল বৃষ্টি ও নদী বাঁধ ভেঙে সবংয়ের ১৩টি অঞ্চলের ২৩২টি মৌজা প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে।পাকুড়িয়া শ্যামরাইচকের কাছে কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে হুহু করে। অন্যদিকে খড়িকাতে ভেঙেছে জমিদারি বাঁধ। জানা গেছে ১৩টি অঞ্চলের মোট ৬০হাজার বাড়ি এখন জলবন্দি।
ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে ১৩টি অঞ্চলেই ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বর্তমান জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভূঁইয়া সেচ মন্ত্রী থাকার সময় কেন্দ্রের কাছ থেকে কেলেঘাই কপালেশ্বরী সংস্কার বাবদ টাকা বরাদ্দ করিয়ে যে কাজ করেছিলেন তারই জেরে গত ১২বছর বন্যা হয়নি সবংয়ে। কিন্তু মাঝখানে কোনও সংস্কার না হওয়ায় এবার ফের নতুন করে বন্যা হল।
আড়াই দিনের বৃষ্টি বিপর্যয়ে জেলার বিভিন্ন অংশ যখন জলমগ্ন ঠিক সেই সময়ই আরেক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় থানা এলাকার মদনমোহনচক এলাকা। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মদনমোহন চক এলাকা হঠাৎই কালো মেঘে ঢেকে যায়। হাতির শুঁড়ের মতন কালো মেঘ রূপী বাতাস পাক খেতে খেতে নেমে আসে পুরিচকের মদনমোহন চক এলাকায়। মাত্র মিনিট খানেকের সেই ঝড়েই তছনছ হয়ে যায় ঘরবাড়ি,দোকানপাট। মাটি থেকে উপড়ে যায় বেশকিছু গাছপালা। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে বেশকিছু বাড়ি, আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
ওদিকে টানা আড়াই দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের আদ্রা রেল ডিভিশনের শালবনীর গোদাপিয়াশাল ও গোবরুর মাঝে রেল লাইনে বেশ কয়েক মিটার ধস নামায় ওই লাইনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেন চলাচল। খবর পেয়েই বুধবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলের ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা। রেল সূত্রে জানা গেছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই শুরু হয়েছে মেরামতির কাজ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন রেলের আধিকারিকরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে বৃষ্টি বিপর্যয়ে এখনও অবধি পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭জনের মৃত্যু হয়েছে। মেদিনীপুর সদর, কেশিয়াড়ী, খড়গপুর গ্রামীন, কেশপুর, নারায়নগড়ের এই মৃতদের মধ্যে ৩ মহিলা সহ ৫জনের নাম পরিচয় জানা গিয়েছে। এরা হলেন, মেদিনীপুর সদরের পাঁচখুরির জামকুন্ডা গ্রামের কোহিনুর বিবি, কেশপুরের আমড়াকুচির অরুণ সাঁত,খড়গপুরের পশ্চিম পাথরির রাখাল হেমব্রম, কেশিয়াড়ীর খাজরার বিজলী পাতর, নারায়নগড়ের সরিষাগেড়িয়ার অহল্যা সাল। এরা প্রত্যেকেই দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছে। বাকি ২জনের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে প্রশাসন।