নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে ৪ কৃষক সহ ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড় নিল মঙ্গলবার। মিছিলরত জনতার ওপর দিয়ে গাড়ি চালানোর ঘটনাকে পরিকল্পিত খুনের ঘটনা বলে রিপোর্ট দিল বিশেষতদন্তকারী দল বা সিট। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্র ওরফে মনুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করতে চলেছে ওই বিশেষ তদন্তকারী দল। উল্লেখ্য প্রথমে এই ঘটনাকে নিছকই দুর্ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছিল। মঙ্গলবাদ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) আদালতে জানিয়েছে, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।
ঘটনার তদন্তকারী অফিসার বিদ্যারাম দিবাকর তাঁর রিপোর্টে বলেছেন, এটা কোনও দুর্ঘটনা নয়। আগে থেকে পরিকল্পনা করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সিজেএম আদালতে লখিমপুর খেরি-কাণ্ডে হত্যা, গুরুতর আহত করা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ধারা যুক্ত করার অনুমতি চেয়েছেন বিদ্যারাম। মঙ্গলবার সব অভিযুক্তকে তলব করেছে আদালত। আদালতে বিদ্যারাম জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যে প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে, তা থেকে তাঁদের মনে হয়েছে, লখিমপুর খেরিতে সে দিনের ঘটনার পিছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। তাই এই ঘটনায় ৩০৪ এ ধারা বাতিল করতে চান তাঁরা। সেই জায়গায় ৩০৭ ধারা (খুনের চেষ্টা) যুক্ত করতে চান। এ ছাড়াও ৩২৬, ৩৪, ২৭৯, ৩৩৮ এবং ৩০৪এ-র মতো ধারা যোগ করার অনুমতি চেয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ফরেন্সিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্রের বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। ওই রিপোর্ট বলছে, লখিমপুর- কাণ্ডের আর এক অভিযুক্ত অঙ্কিত দাসের বন্দুক থেকেও সে দিন চালানো হয়েছিল গুলি। আশিস এবং অঙ্কিতের বিরুদ্ধে কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে খুন করার পাশাপাশি গুলি চালানোরও অভিযোগ রয়েছে। তার কয়েক দিন পরেই উদ্ধার করা হয় তাঁর বন্দুক।
উল্লেখ্য গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে আশিসের গাড়ির তলায় চাপা পড়ে বিক্ষোভকারী চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরবর্তী হিংসায় আরও চার জনের প্রাণ যায়। যদিও অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস। এরপর প্রবল চাপের মুখে গত ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মঙ্গলবারের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই আরও বিপাকে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার এবং পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের পদত্যাগ ও গ্রেপ্তার দাবি করা হয়েছে। বিরোধীরা বলেছেন, মন্ত্রী প্রথমে দাবি করেছিলেন তিনি ঘটনার কথা জানতেননা। এখন দেখা যাচ্ছে যেখানে তাঁর গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাঁর ছেলে ঘটনায় যুক্ত তখন তাঁকে এই মৃত্যুর দায় নিতেই হবে।