Saturday, July 27, 2024

TMC : কয়লাকান্ডে সস্ত্রীক অভিষেক, গরু পাচারে অনুব্রত, ত্রাণের টাকা লুটে প্রধান, কর্মাধ্যক্ষ! আদালতের তিন তীরে বিদ্ধ তৃনমূল

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: গোয়া পরাজয়ের চেয়েও দুঃসংবাদ নেমে এসেছে তৃনমূল কংগ্রেসের অন্দরে। গত ৩দিনে তৃনমূল কংগ্রেসের আগাপাশতলা আদালতের তিন তীরে বিদ্ধ হয়েছে শাসকদল। হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থেই আগাপাশতলা বলতে যা বোঝায় তাই উঁচু থেকে নিচু এবং মধ্যবর্তী তিনস্তরের নেতারাই আদালতের কাছে নিজেদের জন্য রক্ষা কবচ চাইতে গিয়ে প্রত্যাহৃত হয়েছেন। যারমধ্যে রয়েছেন সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল এবং উত্তরবঙ্গের এক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যাক্ষ ও প্রধান সহ ৩ তৃনমূল নেতা।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

যেমন কয়লা পাচার কান্ডের তদন্তকারী সংস্থা ইডি দিল্লিতে তলব করে জেরা করতে চায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে। কয়লা পাচার কান্ডে কোটি কোটি টাকার বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ইডির জেরা আটকাতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। কংগ্রেস প্রবীণ নেতা তথা অভিষেকের আইনজীবী কপিল সিব্বলের সওয়ালকে উড়িয়ে দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে দিল্লিতেই এসে মুখোমুখি হতে হবে ই.ডির। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রীর নামে ঝুলছে কয়লা পাচার কান্ডে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের মামলা। সেই কারণেই দুজনকে জেরা করতে চায় ইডি। কিন্তু কেন্দ্রীয় এজেন্সি দুজনকে দিল্লিতে জেরা করার নোটিশ দেয়। এরপরই তাঁদের যেন কলকাতায় জেরা করা হয় এই আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক রুজিরা। এদিন এই আবেদনই খারিজ করে কোর্ট।
ইডির পক্ষে সওয়াল করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা বলেন, ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অধিকার রয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে তদন্ত করার। তা ছাড়া বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলা কোনও থানা বা রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ‘

পরের ঘটনা অনুব্রত মন্ডলের। আন্তঃরাষ্ট্রীয় গরু পাচার চক্রের খলনায়ক এনামুল হককে গ্রেফতারের পর এই কান্ডে উঠে এসেছে তৃনমূল কংগ্রেসের বীরভূম সেনাপতির নাম। সেই কারণে তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে সিবিআই। কিন্তু তিনবারই তিনি বিভিন্ন অজুহাতে সেই জেরা এড়িয়ে গেছেন। যারমধ্যে দু’বারই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন জেরার দিন। এরমধ্যেই সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে গ্রেফতারির বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু আদালত সেই আবেদন বাতিল করেছেন। অর্থাৎ রক্ষাকবচ দেওয়া হয়নি তাঁকে। হাইকোর্টে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা জানতে চান, “যেহেতু মূল অভিযুক্ত নন, তাহলে গ্রেফতার হওয়ার অনুমান কেন ?” তিনি স্পষ্ট বলেন, “তদন্তকারী সংস্থা কিছু কারণে সমন পাঠালেই আদালত বার বার ঢাল হতে পারে না। সিবিআইএর হাত এভাবে বাধা ঠিক নয়।”  আদালতে কাছে বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় অনুব্রত মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। পাশাপাশি বিশেষ করে তাঁর বিরুদ্ধে যেন কোনও কড়া পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, আবেদনে সেই আর্জি করা হয়েছিল।  এই রায় শোনার পরই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন অনুব্রত মন্ডল।

অন্যদিকে বন্যাত্রাণের ৭৬ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিন তৃনমূল নেতানেত্রী। এবার সেই মামলায় তিন তৃণমূল নেতা নেত্রীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। মালদহের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহা, কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন ও তৃণমূল নেতা আফসার আলির বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ত্রাণের জন্য দেওয়া টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছেন মালদহের এই তৃণমূল নেতানেত্রীরা। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ঘটনা। তিন জনের বিরুদ্ধে ত্রাণের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলেছিলেন এক ব্যক্তি। প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেখানে তৃণমূলের তিন নেতা-নেত্রীর জামিন খারিজ হয়ে যায়।
কয়েকমাস গড়ালেও পুলিশ তাদের হদিশ পায়নি। প্রধানের বাড়িতে আদালতের নির্দেশ ঝুলিয়ে দিয়ে তাঁদের আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হয়েছিল। এমনকি আদালতের নির্দেশে প্রধানের বাড়ি থেকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও ফল মেলেনি। ধরা দেননি অভিযুক্তরা। প্রথমে নিম্ন আদালত ও পরে কলকাতা হাই কোর্টেও তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এবার সুপ্রিম কোর্টও তিন জনকেই দু সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

- Advertisement -
Latest news
Related news