নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার, ২২নভেম্বর থেকে ফের বেলা ১০.৫০ থেকেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ক্লাশ শুরুর সময়। পাশাপাশি এও জানিয়ে দেওয়া হল যে শনিবার ছাত্রছাত্রীদের স্কুল আসতে হবেনা কারন ওইদিন পঠনপাঠন হবেনা। নতুন এই নিয়ম অনুসারে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাশ সোম, বুধ এবং শুক্রবার হবে এবং নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার হবে।
দুটি ক্ষেত্রেই বিদ্যালয় সময় সকাল ১০:৫০ মিনিট থেকে বিকেল ৪:৩০ মিনিট পর্যন্ত। পর্ষদের নতুন নিয়মে বলা হয়েছে শনিবার পঠন-পাঠন বন্ধ থাকবে, সেদিন ফিডব্যাক ও সচেতনতা মূলক বিষয় নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কাজ করবেন। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পার্বত্য অঞ্চলের বিদ্যালয়ের সময় সকাল সাড়ে নটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত ক্লাশ চলবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ছুটির দিনগুলোতে ক্লাশ সংক্রান্ত বিষয় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির উপর ছাড়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা দপ্তর স্কুল কমিশনারের নির্দেশমতো তদারকি করবেন।
উল্লেখ্য করোনা কাল কাটিয়ে প্রায় ১৮ মাস পর পঠনপাঠন শুরু হয় গত ১৬ই নভেম্বর। সেই নিয়মে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ক্লাশ শুরু করতে বলা হয় এবং বলা হয় যে অন্যদিনের মত শনিবারও সাড়ে ৪টা অবধি ক্লাশ করতে হবে। বিষয়টিকে অবৈজ্ঞানিক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা। ওই নিয়মে সাড়ে ৯টা থেকে ক্লাশ শুরু করতে বলা হয়েছিল নবম ও একাদশ শ্রেণীর যা বেলা সাড়ে ৩টা অবধি চালাতে বলা হয়। দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাশ সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ৪টা অবধি চালাতে বলা হয়। এরফলে সমস্যায় পড়ে স্কুলগুলি। দূরদূরান্ত থেকে আসা শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে এসে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়ছিলেন। তাছাড়া এক সাথে অত ছাত্রছাত্রী চলে আসায় সামাজিক দূরত্ববিধি মানা সম্ভব হচ্ছিলনা।
পর্ষদের পক্ষে সেই যুক্তি ও বাস্তব সমস্যা মেনে নিয়ে বলা হয়েছে সামাজিক দূরত্ববিধি মানতেই পড়ুয়াদের দুটি ভাগে ভাগ করা হল। পাশাপাশি শনিবার সারা সপ্তাহের পঠনপাঠন, সচেতনতা, পড়ানোর নব নব উদ্ভাবন ইত্যাদি নিয়ে বিদ্যালয়ে আলোচনা হবে যেখানে শিক্ষাবিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠন।
রাজ্যের বিদ্যালয় প্রধানদের সংগঠন’ অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস’ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেছেন, ‘আমরা এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে বলছি, এভাবে দ্রুত আবার রুটিনে পরিবর্তন ছাত্র- শিক্ষক- অভিভাবক মহলে পর্ষদের সিদ্ধান্তহীনতাকে দীপ্ত সমালোচনা সুযোগ করে দিচ্ছে। সুপরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ এর পক্ষ থেকে করতে গেলে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার সুযোগ রাখতে হবে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক বিভাগকেও। পাশাপাশি আমরা সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের পর্যায়ক্রমিকভাবে ইস্কুলে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। নিয়মিত রান্না করা খাবারের অভাবে শৈশব ও কৈশোর দেহমনে যে নিদারুন ঘাটতি তৈরি হয়েছে গত ১৮মাসে তা পূরণ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পুষ্টিহীন ছাত্রছাত্রী যেমন ভালো শিক্ষা গ্রহন করতে পারেনা তেমনি সমস্ত সমাজে একটি দুর্বল স্থায়ী প্রজন্মকে রেখে যায়।’