নিজস্ব সংবাদদাতা: ব্যাপক বৃষ্টিতে বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হল ৪০বছরের এক যুবকের। খড়গপুর শহর ঘেঁষে ঘাগরা পশ্চিম পাথরিতে ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার গভীর রাতে। বুধবার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম হাবু হেমব্রম। দিন মজুর হাবু পশ্চিম পাথরিতে নিজের পরিবারের সঙ্গেই থাকত। একই উঠোনের মধ্যে একটি পৃথক মাটির বাড়িতে একাই রাত্রে ঘুমিয়েছিল অবিবাহিত ওই যুবক। পাশেই অন্য একটি বাড়িতে ছিল হাবুর ভাই বাবলু হেমব্রম ও তার পরিবার।
বাবলু জানিয়েছে রাতের খাওয়া দাওয়া পর আমরা যে যার ঘরে শুয়ে পড়েছিলাম। মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছিল, সারাদিন কাজকম্ম কিছুই করতে পারেনি। সন্ধ্যার পর বৃষ্টি আরও বাড়ে ।বাড়ির চারপাশে জল জমেছিল। সেই জলে যে দেওয়াল পড়ে যাবে ভাবতেই পারিনি। প্রচন্ড বৃষ্টির জন্য কোনও শব্দই পাইনি। রাতে কখন বাড়ি ভেঙেছে বুঝতেই পারিনি। সকালে উঠে দেখি গোটা বাড়িটাই দুমড়ে মুচড়ে গেছে। তাড়াতাড়ি করে লোকজন ডাকাডাকি করে ভাঙা ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখি দাদার পা দুটো শুধু বেরিয়ে আছে। এরপর মাটির চাঙড় সরিয়ে দাদার দেহ বের করা হয়। তখন সব শেষ।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাবুর ঘরের ভেতরে আরও একটি মাটির দেওয়াল দিয়ে ঘরটিকে পার্টিশন করা ছিল। ওই দেওয়ালটিই ভেঙে পড়েছিল তার ওপর। দেওয়ালটি পড়ে তার মাথায় জোরালো চোট লাগে। এছাড়া পুরো দেওয়ালটি গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে তাকে চেপে দেওয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। যখন দেওয়ালটি ভেঙে পড়ে তখন কেউ বুঝতেই পারেনি। সাথে সাথে উদ্ধার করা সম্ভব হলে হয়ত তিনি বেঁচে যেতেও পারতেন।
সকালে খবর পেয়ে ছুটে আসে স্থানীয় প্রতিবেশী ও ক্লাবের ছেলেরা। প্রতিবেশী সান্টু রঞ্জন দে জানিয়েছেন, ‘শুধু পা দুটো ছাড়া হাবুর পুরো শরীরটাই দেওয়ালের তলায় পড়েছিল। যখন ওকে উদ্ধার করা হয় তখন দেহে প্রাণ ছিলনা।’ খবর পেয়েই পৌঁছে যায় খড়গপুর গ্রামীন থানার পুলিশ কর্মীরা। দেহটি উদ্ধার করে তারা খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছেন ময়নাতদন্তের জন্য। গোপালি গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গেছে মৃতের পরিবারকে সরকারি সাহায্য বাবদ বরাদ্দ অর্থের জন্য তদ্বির করা হচ্ছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে খড়গপুর রেলস্টেশনের ১এবং ২নম্বর প্ল্যাটফর্মের সংযোগস্থলের সাবওয়েটি পুরোপুরি জলের তলায় চলে গেছে। জল থৈ থৈ করছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মগুলিতে। নিচের ময়লা আবর্জনা জলে ভেসে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা প্ল্যাটফর্ম জুড়ে। প্ল্যাটফর্মের বাইরে বোগদার দিকে আসতে গেলে হাঁটুর ওপর দিয়ে বইছে জল। ঘটনার জেরে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন এবং স্টাফ স্পেশাল বাতিল করেছে দক্ষিনপুর্ব রেল।