শশাঙ্ক প্রধান: পিংলার গৃহবধূর দেহ উদ্ধারের ৬ ঘন্টার মধ্যেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক প্রতিবেশী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম রঞ্জন সিং। ৪০ বছরের রঞ্জনের বাড়ি ওই উজান গ্রামেই। উজান গ্রামের গৃহবধূ মৃত্যুর সঙ্গে ধৃত ব্যক্তির যোগ রয়েছে এমনই মনে করছে পুলিশ। বুধবার ভোরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার উজান গ্রামের ধানক্ষেতের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল আদিবাসী গৃহবধূ বেহুলা সিংয়ের অবিন্যস্ত মৃতদেহ। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ দীনেশ কুমার। “বুধবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি জানান, এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি আমরা। ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার আগের মুহূর্তে ধৃত ব্যক্তির ফোন পেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।”
মৃতা বেহুলার স্বামী বিপিন জানিয়েছেন, মেয়েকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বেহুলা। ফেরার পথে মেয়েকে বাড়ি যেতে বলে নিজে একটু পরে বাড়ি যাচ্ছেন বলেছিলেন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। পুলিশের অনুমান তখুনি তিনি রঞ্জনের ফোন পেয়ে চলে গেছিলেন। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মৃতার সঙ্গে পূর্ব পরিচয় ছিল ধৃত রঞ্জন সিংয়ের। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রঞ্জন রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। বেহুলা অনেক সময় তার কামিন বা জোগাড়দারের কাজ করত। এই সূত্রেই দুজনের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সম্পর্কের সেই টানা পোড়েনের জেরেই কী বেহুলার মৃত্যু? বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গৃহবধূর মৃত্যু ঠিক কী ভাবে হয়েছে সে নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে মৃতা গৃহবধূর দেহের বহিরাঙ্গে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি কোনও রক্তপাতের চিহ্নও। ফলে গৃহবধূর মৃত্যু ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে পুলিশকে। পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার আগে ধৃতের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, তাঁরা কখন কোথায় দেখা করেছিলেন, কী হয়েছিল এসবের জন্য দুজনের মোবাইল ঘেঁটে ও ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করা হবে। গৃহবধুকে ধর্ষণ করার পর খুন করা হয়েছে এমনই একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহবধূর স্বামী। তিনি কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন। পুলিশ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছেন এমন যে কেউ বা কারা পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবেনা। তবে এখনও অবধি রঞ্জনকেই একমাত্র সম্ভাব্য বলে মনে করছে পুলিশ।