নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়সড় সাফল্য পেল খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ (Kharagpur Town Police station) । উত্তরবঙ্গের সুদূর আলিপুরদুয়ার থেকে জালিয়াতির আরেক পান্ডাকে গ্রেফতার করল খড়গপুর টাউন থানার তদন্তকারী দলটি। পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তের নাম ভিকি হাজারি। বছর তিরিশের ভিকি আইআইটি খড়গপুরে (IIT Kharagpur)চাকরি দেওয়ার প্রতারণার (fraud) চক্রের উত্তরবঙ্গ এলাকায় ফাঁদ পাতার কাজ করত বলত পুলিশের দাবি। আলিপুরদুয়ারের শামুকতলা থানার শিবকাটা গ্রামের বাসিন্দা এই ভিকির হাত ধরেই সম্প্রতি চার যুবক খড়গপুরে এসেছিল আইআইটি খড়গপুরের ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স এন্ড রিসার্চ ( Dr. Shyama Prasad Mukherjee Institute of Medical Sciences and Research is a super specialty hospital) বা আইআইটি খড়গপুরের নব নির্মিত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
খড়গপুর শহরের ইন্দা এলাকায় আশীর্বাদ লজে উঠেছিল তাঁরা। কিন্ত লেনদেন সম্পর্কিত গন্ডগোল বাধায় খবর যায় পুলিশে। পুলিশ জানতে পারে কয়েকজন যুবককে আটকে রেখে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়েই পুলিশ এসে ওই লজে হানা দিয়ে বুঝতে পারে চাকরির নামে বড়সড় প্রতারণা চক্র কাজ করছে শহরে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ খড়গপুর শহরের চার জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের হেফাজতে থাকা ওই যুবকরা হল ইন্দা বিদ্যাসাগরপুরের রবিশঙ্কর দাস, তালিবাগিচা এলাকার অভিজিৎ দাস, হিজলী সোসাইটি এলাকার সাগর কুমার রাউত এবং চামরুসাই গ্রামের তপন জ্যোতি মান্না। উত্তরবঙ্গের আরও দুই পান্ডা ভিকি হাজারি ও শুভাশিস দাসের খোঁজ করছিল পুলিশ। শনিবার ভিকিকে নিজের গ্রাম থেকে গ্রেফতার করলেও এখনও অধরা কোচবিহারের বাসিন্দা শুভাশিস দাস। ভিকিকে ট্রানজিট রিমান্ডে খড়গপুরে আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য ওই দিন আশীর্বাদ লজে থাকা মালদার এক যুবক উজ্জ্বল বিশ্বাস অভিযোগ করেন আইআইটি খড়গপুরের নব নির্মিত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সিকিউরিটি গার্ড ও ল্যাব (Junior Technician/Junior Laboratory Assistant) যথাক্রমে ৪ লাখ ও ৫লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল অভিযুক্তরা। উজ্জ্বল নিজে ৩লাখ টাকা দিয়েছিলেন অন্যরা দিয়েছিল ৫০ হাজার করে। এরপরই ওদের হাতে আ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার তুলে দেওয়া হয় কিন্তু আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষের নাম করেই নিয়ে নেওয়া হয় সমস্ত পাশ সার্টিফিকেটের অরিজিনাল কপি। বলা হয়েছিল বকেয়া অংশ দিলেই ফেরৎ দিয়ে দেওয়া হবে ওই কপি। ওই সমস্ত কপির সাথে আ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে হাসপাতালে গেলেই জয়েন্ট করানো হবে চাকরিতে! কিন্তু আ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার দেখে তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা তাঁদের টাকা এবং অরিজিনাল ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই খড়্গপুরের এক বেসরকারি লজ থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু দুজন অভিযুক্তের হদিস পাওয়া যায়নি।
পুলিশের অনুমান ঘটনার দিন ভিকি হাজরা ও শুভাশিস দাসও খড়গপুরেই ছিল কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই কোনও ভাবে পালিয়ে যায় তাঁরা। অভিযোগকারী জানান, তাঁকে ও আরও পাঁচ জনকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের পদে নিয়োগ করা হবে বলে শুভাশিস দাস ও ভিকি হাজারি নামে দুজন টোপ দিয়েছিল।