নিজস্ব সংবাদদাতা: সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি সমাজজীবনে নানান কুফল নিয়ে আসছে। মোবাইল আসক্তি থেকে একের পর এক আত্মহত্যার সংবাদ আসছে সারা দেশ থেকেই। কিন্তু এবার একটি ভয়ানক ঘটনার খবর পাওয়া গেল। জানা গেছে ফেসবুক নিয়ে অশান্তির জেরে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল হাওড়ার চ্যাটার্জীহাটে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক দম্পতির। ইতিমধ্যেই দেহদুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের কারণেই স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী। আর এই খুন আর আত্মহত্যার কারন হিসাবে স্ত্রীর অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তিই কারন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও আর অন্য কোনও কারন রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ৪৫ বছরের মৃত ব্যক্তির নাম গৌতম মাইতি। স্ত্রী চৈতালীর বয়স চল্লিশের গায়ে। তাঁদের দুই মেয়ে মৌরুশী-আরুশিকে নিয়ে হাওড়ার চ্যাটার্জীহাটে নন্দলাল মুখার্জী লেনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। গৌতম একটি বারের ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। বার টি হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার ছুটির দিন ছিল গৌতমের। বাড়িতেই ছিলেন। দুপুরে ওই দম্পতির দুই নাবালিকা মেয়ে ক্লাশ নাইন ও ক্লাশ থ্রির মৌরুশি ও আরুশি গিয়েছিল আঁকার ক্লাসে। সেখান থেকে ফিরে দেখে ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। বাবা-মাকে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও কোনও লাভ হয়নি। এরপরই সন্দেহ হয় দুই নাবালিকার। তখনই তারা খবর দেয় থানায়। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।
পুলিশও প্রথমে ডাকাডাকি করে প্রথমে কিন্তু কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ওপাশ থেকে। বাধ্য হয়ে দরজা ভাঙে পুলিশ। দেখা যায়, ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছেন গৌতম। মেঝেয় পড়ে রয়েছে স্ত্রী চৈতালীর দেহ। ইতিমধ্যেই দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। কান্নায় ভেঙে পড়েছে দম্পতির দুই সন্তান। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, স্ত্রীকে খুন করার পর আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি।
দম্পতির দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে চৈতালীর মারাত্মক ফেসবুক আসক্তি ছিল। দিনের বেশিরভাগ সময় পড়ে থাকতেন ফেসবুক নিয়েই সারাক্ষণ যা পছন্দ ছিল না স্বামীর। তা নিয়ে নিত্য অশান্তি চলত দম্পতির মধ্যে। সেই ঝামেলা চরমে ওঠার কারণেই হয়তো এই পরিণতি। যদিও সেই কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রহস্যভেদ করতে মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে আরও ক্লু খুঁজছেন আধিকারিকরা।