Saturday, July 27, 2024

Haldia: হলদিয়া জুড়ে ১৮ঘন্টা পেরিয়েও চলছে আয়কর বিভাগের তল্লাশি! শিবির পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়েই প্রতিহিংসা, শুভেন্দুকে তোপ বন্দর ব্যবসায়ীর

- Advertisement -spot_imgspot_img
চলছে তল্লাশি, ডিঘাসিপুর, হলদিয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার নজির বিহীন আয়কর হানার নজির থাকল হলদিয়া। সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পেরিয়েও আয়কর আধিকারিকদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত বন্দরনগরীতে। কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিবেষ্টিত প্রায় ১০০ আধিকারিক এই তল্লাশিতে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে হলদিয়া এবং তার আশেপাশে সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ১৭টি জায়গায় এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। ৫ থেকে ৭জনের দল বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে এই তল্লাশি চালিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। প্রাক্তন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ট ও সর্বাধিক তল্লাশির শিকার এক ব্যবসায়ী সরাসরি তোপ দেগেছেন বিধানসভার বিরোধী দল নেতার বিরুদ্ধে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

একটি সূত্রে জানা গেছে প্রায় ২০০ এসইউভি বাহিত আয়কর দপ্তরের আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ ছড়িয়ে পড়ে হলদিয়া ও তার আশেপাশের এলাকায়। এই তল্লাশির সর্বোচ্চ প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বন্দর ব্যবসায়ী সেক মজফ্ফরের বিরুদ্ধে। হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর শেখ মজফ্ফর এবং তাঁর ছেলে শেখ আজগর ও আরেক ছেলে শেখ আশরাফের অফিস কাম বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। জানা গেছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের হলদিয়াগামী জাতীয় সড়কের পাশে ডিঘাসিপুর তালপুকুর এলাকায় মজফ্ফরের বাড়ি কাম অফিস এবং একাধিক গোডাউনে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তল্লাশি চালানো হয়েছে মহিষাদলের গোপালপুর ও হলদিয়া টাউনশিপে অবস্থিত বাড়িতেও।

পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হয় শেখ মজফ্ফরের ছেলে তথা হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল(পূর্ত) শেক আজগর আলির টাউনশিপের বাড়িতেও হানা দেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। তল্লাশি চলে এইচপিএল লিঙ্ক রোডে অবস্থিত মজফ্ফরের অপর ছেলে শেখ আশরাফের অফিসেও। আজগর ছাড়াও এদিন আয়কর দপ্তর হানা দেয় হলদিয়ার আরও দুই বন্দর ব্যবসায়ী অমিত মুখোপাধ্যায় ও শুভ্র ভট্টাচার্যের বাড়িতে একই সঙ্গে আয়কর দপ্তর হানা দেয় বলে জানা গিয়েছে। এঁরা তিনজনই বন্দরে কার্গো হ্যান্ডেলিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

ডিঘাসিপুরে তল্লাশির চলার সাথে সাথে শেখ মজফ্ফরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আয়কর আধিকারিকরা। একইভাবে টাউনশিপের ফ্ল্যাটে গিয়ে আয়কর অফিসাররা আজগরকে দীর্ঘ জেরা করেন বলে জানা গিয়েছে। আয়কর দপ্তর কী ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সে বিষয়ে মুখ না খুললেও মজফ্ফরবাবু এনিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তোপ দেগেছেন। ছেলে আজগর তৃনমূলে থাকলেও শুভেন্দু ঘনিষ্ট মজফ্ফরবাবু বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে চলে যান। বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরুনোর পরই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন তিনি। কিছুদিন আগে তৃনমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নির্বাচিত হন দেবপ্রসাদ মন্ডল। তাঁর সাথে দেখা করে তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েও আসেন।

শেখ মজাফ্ফর জানান, ‘ আমার মনে হচ্ছে এই ঘটনার পেছনে শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন কারন ওনার স্বভাবই হল পুলিশ বা বিভিন্ন ভাবে অন্যদের হেনস্থা করা। এই কাজ তিনি আগেও করেছেন। আমার অবশ্য কোনও ভয় নেই কারন আমরা পরিচ্ছন্ন ভাবে ব্যবসা করি। আর আমি বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক দলও করিনা।’ তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘এটা বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্ত। তৃণমূলের কাউন্সিলারকে কালিমালিপ্ত করতে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে আয়কর দপ্তর হানা দিয়েছে।’

হলদিয়ার বিজেপি নেতা প্রদীপ বিজলি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। তবে বন্দরে শ্রমিকদের পিএফ ইএসআই দীর্ঘদিন যে সমস্ত ঠিকাদার সংস্থা বকেয়া রাখে তাদের আয়কর নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।

তবে অন্য দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে আয়কর হানার ঘটনায় কিছুটা হলেও চমকিত রাজনৈতিক মহল। কারন প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদক ঘনিষ্ঠ বন্দরের ওই দুই ব্যবসায়ীর এখনও অবধি সরাসরি তৃনমূল যোগ মেলেনি বরং শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদকের সঙ্গে থাকায় তারা রাজ্যের শাসকদলের বিরাগভাজন হয়েই ছিলেন। তাহলে কেন তাঁদের বাড়িতে এই হানা এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের মতে আয়কর হানার বিষয়টিকে অরাজনৈতিক বিষয় হিসাবে দেখানোর জন্যই ওই দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে আয়কর হানার একটি লোক দেখানো তল্লাশি চালানো হয়েছে।

- Advertisement -
Latest news
Related news