নিজস্ব সংবাদদাতা: এক আশ্চর্য জন্মদিন পালন করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের রায় পরিবার। জন্মের আগেই পিতৃহারা হয়েছে যে শিশুকন্যা তারই জন্মদিন পালন করলেন সেই সব শিশুদের সাথে যারা কখনও জন্মদিনের আনন্দই বোঝেনি। সোমবার এমনই এক অবাক জন্মদিনের স্বাক্ষী রইল মেদিনীপুরের তাঁতিগেড়িয়ার রেল বস্তির ৫০টি শিশু।
এই শিশুদের কেউ প্লাস্টিক কুড়োয়, কেউ কাগজ। আবর্জনার ভেতরে হাত গলিয়ে তুলে আনা বিক্রয় যোগ্য জিনিস কুড়িয়েই এদের জীবিকা। জন্মের আগেই পিতৃহারা পরিবারের এমনই শিশুকন্যার জন্মদিন এদের সাথেই পালন করলেন রায় পরিবার। সোমবার সে এক আশ্চর্য জন্মদিন দেখল মেদিনীপুর শহর।
বছর তিনেক আগের সেই ঘটনাটি ছিল এক মর্মান্তিক বেদনাময় দিনের। মরণাপন্ন জেঠুকে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করে ফাঁকা আ্যম্বুলেন্সেই ফিরছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরের বাসিন্দা সৌমিত্র ঘোষ। ২০১৯ সালের ২৮শে আগস্ট। জেলায় ঢোকার মুখেই ডেবরায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সৌমিত্রর। ওই বছরের শুরুতেই বিয়ে করেছিলেন সৌমিত্র আর মৃত্যুর সময় তাঁর স্ত্রী সোনালীর গর্ভে ৪মাসের ভ্রূণ! ওই বছর ১৯ ডিসেম্বর জন্ম হয় কন্যা সন্তান মেঘানের। পিতৃহারা সেই শিশুকন্যা মেঘান ২বছর পূর্ণ করে পা দিল ৩ বছরে। সেই সন্তানের জন্ম দিনের আনন্দ ভাগ করলেন মেদিনীপুরের প্রান্তিক শিশুদের সঙ্গে।
সোমবার মেদিনীপুর শহরের জামবাগান এলাকায় তাঁতিগেড়িয়া রেল বস্তির দুঃস্থ, বাবা-মা হারা, প্লাস্টিক কুড়ানি ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে নিজের সন্তানের জন্ম দিন পালন করলেন মেঘানের পরিবারের সদস্যরা। আমন্ত্রিত ৫০ জন শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শহরের প্রান্তিক এলাকা আবাসের খাসজঙ্গলের জামবাগান মাঠে।
সেখানেই চড়ুইভাতির মেজাজে পালন করা হয় মেঘানের জন্মদিন। শিশুদের প্রত্যেকেই মাস্ক ও গরম টুপি বিতরণ করা হয়। তারপর শুরু হয় ভুরিভোজ। মেঘানের মা সোনালী বলেন, ‘ আমার পিতৃহারা সন্তানকে দিয়েই আমি বুঝেছি সমাজে এরমক কত শিশু আছে। তাদেরও কষ্ট আছে। তাই আমি স্থির করেছি, মেয়ের জন্মদিন গুলো আগামী দিনেও এভাবেই পালন করব, যতদিন আমার সামর্থ্য আছে। ‘