নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ বাদে কাল বিয়ে কিন্তু সরকারি প্রকল্প রূপশ্রী (Rupashree) টাকা মিলছেনা। এ দরজা আর ও দরজা ঘুরে বেড়াচ্ছেন কনে। পুরো ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ এনেছেন হবু কনের পরিবার। বলা হয়েছে কনের বাবা স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতা তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার কনে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের কথা ভেবেই এই প্রকল্প চালু করেছিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadyay)। সেই মতই নিজের বিয়ে পাকা হয়ে যাওয়ার সরকারের কাছে এই প্রকল্পে টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়নগড় থানার অন্তর্গত পাকুড়শেনীর বাসিন্দা আশারানী রায়। কিন্তু নভেম্বরের শেষ দিনে বিয়ের দিন ঠিক হওয়া আশা টাকা পাননি।
রূপশ্রী প্রকল্পের অধীনে বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার পর ফর্ম পূরণ করতে হবে পাত্রীকে।বিয়ের ন্যূনতম ৩০ দিন আগে আবেদন করতে হবে। আয়ের শংসাপত্র, পাত্রীর বয়সের শংসাপত্র, পাত্রের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। সেই ফর্ম যাচাই করে বিয়ের আগে আবেদনকারিণীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে প্রাপ্য টাকা। নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের বার্ষিক আয় ১.৫ লক্ষ টাকা বা তার কম এমন পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক তরুণীরা বিয়ে করলে এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে পাবেন।
হবু কনে আশারানি রায়ের অভিযোগ, ‘নিয়ম মেনেই আবেদন করেছি। আমাদের পরিবার খুব স্বচ্ছল নয় বলেই আমাদের গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে আবেদন করতে যাই। অনেকক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে নানা টালবাহানা করার পর শেষ অবধি আমাকে বলা হয় কগজপত্র ঠিকঠাক নেই, নথিপত্র ত্রুটিপূর্ন। সেই সব ঠিক করে আবারও গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে গেলাম। ওরা যা যা করতে বলেছিলেন করলাম। এবারও আমার নথি জমা নিয়ে ফেরৎ পাঠানো হয়। এবারও বলা হয় আরও কিছু সংশোধন দরকার। কিন্তু কী সংশোধন তা বলা হয়নি।’
কনের বাবা তথা নারায়ণগড়ের বিজেপি নেতা সূর্য রায় বলেছেন, ‘ এটাতে আশ্চর্যের খুব কিছু দেখছিনা। প্রায় সর্বত্রই এটা হচ্ছে। আমি বিজেপি করি, তারই মাশুল দিচ্ছে আমার মেয়ে।’ তৃনমূলের তরফে অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত উপপ্রধান ও তৃনমূল নেতা রঞ্জিত বসু বলেন, ‘এটা সরকারি প্রকল্প। সরকারের আধিকারিকরাই সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে প্রকল্প অনুমোদন করেন। এখানে তৃনমূল বিজেপি বলে কিছু নেই। এরপরও যদি কেউ অসুবিধায় পড়েন আমাদের কাছে আসুন সাহায্য করব। অযথা রাজনীতি করার কী অর্থ?’
আগামী ৩০শে নভেম্বর বিয়ে। আত্মীয় স্বজন নেমন্তন্ন হয়ে গেছে। চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় টাকাটা কাজে লাগত। কিন্তু তা না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পরিবার। স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এটা হওয়ার কথা নয়। যদি যোগ্য আবেদনকারিণী আবেদন করে থাকেন তবে নিশ্চিতরূপে তিনি টাকা পাবেন। প্রয়োজনে সরাসরি ব্লক অফিসে আসুন। ব্লকের আধিকারিকরা সাহায্য করবেন।