Saturday, July 27, 2024

গড়বেতায় লাল সুনামি! তৃণমূলকে গড়বেতা থেকে “রেফার” করার মিছিল

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ যেন ১১ বছরের আগের গড়বেতা! সেই লাল পতাকা, সেই আছড়ে পড়া মানুষের মিছিল, ঠিক যেন ১১ বছর আগের গড়বেতা। কে বলবে সরকারে নেই সিপিএম। মঙ্গলবার গড়বেতা বিডিও অফিসের সামনের মাঠে থেকে মিছিলের ডাক দিয়েছিল সিপিএম, ডাক দিয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ, সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। আর সেই মিছিল যেন সুনামিতে পরিনত হল বেলা ১১ টা নাগাদ বিডিও অফিস থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মিছিল পৌঁছানোর পর। কিন্তু ২ কিলোমিটার দূরে কেন? গড়বেতার সিপিএম নেতা দিবাকর ভূঁইয়া, তপন ঘোষরা বলেন, সকাল থেকেই কর্মীরা ফোন করে জানাচ্ছেন এই মিছিলে আসার জন্য তাঁরা যে গাড়িগুলো ভাড়া করেছিলেন সেগুলো গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছেনা তৃনমূলের লোকজন। কিছু গাড়ি গ্রামে ঢুকেছিল সেগুলি ফিরিয়ে দিয়েছে ওরা। ফলে মোটর সাইকেল কিংবা ছোট ছোট চারচাকা ভাড়া করে আসতে হয়েছে। নতুন গাড়ি জোগাড় করতে সময় লাগছে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

এরই মধ্যে এক এরিয়া কমিটির সম্পাদকদের ফোন
ফোন এল, “দাদা ওরা হুমকি দিচ্ছে গ্রামে গাড়ি ঢুকলে গাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে। গাড়ি ওয়ালারা গ্রামের বাইরে থেকেই ফেরত নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা মিছিল শুরু করুন আমরা ঘুর পথে যাচ্ছি।” বাঁকুড়া ও হুগলি জেলার সীমান্ত সন্ধিপুর সহ একারকিয়া, খড়কুশমা এমন তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নাকি সোমবার রাত জুড়ে বাইক বাহিনীর হুমকি সহ তান্ডব চলেছে। কিন্তু মানুষ আসছে ছদ্মবেশে! কেউ বাইকে সবজি নিয়ে, কেউ আলু বীজ, সার কেনার নাম করে, এমনকি ঘরের মহিলাদের বাইকে চাপিয়ে ডাক্তার দেখানোর নাম করে নাকি ওরা এসেছেন! একজন বললেন, “দাদা এই সেই গড়বেতা! আমাদের বিডিও পরীক্ষায় জালিয়াতি করে বিডিও হয়েছে তৃনমূলের দয়ায়। তাই তৃনমূলের সব চুরি মাফ। মোরাম চুরি, বালি চুরি, জঙ্গল চুরিও।” মনে পড়ে গেল সংবাদপত্রে এমন খবর বেরিয়েছিল বটে।

মিছিলে আসা মানুষই জানালেন, শীলাবতী ও তার শাখা নদী গুলোর ওপর সব মিলিয়ে ২৮ টি কাঠের সেতু নির্মাণ হয়েছিল বাম আমলে। শক্তপোক্ত ওই কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে লরি পেরিয়ে যেত। কিন্তু গত ১১ বছরে ১৭টি অকেজো। বালি আর মোরাম মাফিয়াদের দাপটে। সেগুলির সংস্কার করেনি পঞ্চায়েত। ফলে শাক সবজি আর আলুর ভান্ডার গড়বেতার কৃষকরা তাদের ফসল বাজার জাত করতে পারছেন না, পাইকারও গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারেনা গ্রামে। শহর আর গঞ্জ থেকে যোগাযোগ বিছিন্ন কৃষকরা দাম পাচ্ছেননা। ফলে মার খাচ্ছেন ছোট ছোট গঞ্জগুলিতে গড়ে ওঠা বাজার ও দোকান পাট। এলাকার অর্থনীতি মন্দার কবলে।

সুশান্ত ঘোষ বলেন, এক সার্বিক লুটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। একদিকে যেমন নদীর থেকে বালি লুঠ হচ্ছে অন্যদিকে এলাকার তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী থেকে বিধায়ক, পঞ্চায়েতরাও লুট করছেন। উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা, আবাস যোজনার টাকা লুঠের সাথে জঙ্গলের কাঠ লুঠ, কাজু আম সহ নানা বাগানের লক্ষ লক্ষ টাকা লুঠ হচ্ছে কিন্তু কেউ কিছুই বলছেনা। কে কাকে বলে? খোদ জেলার সভাধিপতি যেখানে বলেন, আমরা সবাই গলা অবধি পাঁকে ডুবে আছি। মন্ত্রী বলেন, জুন মালিয়া, উত্তরা সিং সবাই কামাচ্ছে।”

সাংবাদিক দেখে মিছিল ছেড়ে ছুটে আসেন মহিলারা। বলেন, ” দিদিকে বলুন ফোনে এখন আর কেউ ফোন ধরেনা। যদি কলকাতা যান দিদিকে বলবেন, গত জুলাই মাস থেকে গড়বেতা হাসপাতালের ৬৫ বেডের ওয়ার্ডের সিলিং ভেঙে পড়ায় ইনডোর পরিষেবা বন্ধ। কেউ ফিরে তাকায় না। ছোট খাটো কিছু হলেও আমাদের অন্য হাসপাতালে রেফার করে। দিদিকে বলবেন, আমরাও তৃনমূলকে গড়বেতা থেকে রেফার করে দেব।” মিছিল চলে, চলতেই থাকে। ভিড় বাড়ে।

- Advertisement -
Latest news
Related news