নিজস্ব সংবাদদাতা: এলাকা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তৃনমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ২তৃনমূল কর্মীর। বোমা গুলির যথেচ্ছ ব্যবহারে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের সিতাই। মহাপঞ্চমীর দিন তৃনমূলের দুই গোষ্ঠীর মহারণে গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ৫ জন তৃনমূল কর্মী। এঁদের মধ্যে ১জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পর মারাত্মক উত্তেজনা রয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় ছুটে গিয়েছেন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। মোতায়েন হয়েছে র্যাফ। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ২জন হলেন মান্নান হক এবং মুজফ্ফর হুসেন। ঘটনায় গুরুতর আহতরা হলেন দুলাল মিঞা, মিন্টু হক, দিলদার হুসেন, আবাইদুল হক এবং জাহাঙ্গির আলম। এর মধ্যে দিলদাল হুসেন গীতালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য এবং সংঘর্ষে জাহাঙ্গিরের ডান হাত কাটা গিয়েছে। সূত্রের খবর, আহতদের মধ্যে চারজন দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কোচবিহারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ও আহতরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী। এলাকার দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। সেই অশান্তির জেরে এই ঘটনা। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
দিনহাটার গীতালদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে মরাকুঠি এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। এলাকা দখল ঘিরেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। গীতালদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল রয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক বার অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল শাসকদলের অপর এক গোষ্ঠী। বিষয়টি নিয়ে ৪ অক্টোবর কলকাতা হাই কোর্টে তলবি সভা ছিল। কিন্তু দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য তা বাতিল করা হয়। ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি নূর আলম হুসেনের দাবি, গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘ মরাকুঠি গ্রামে গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বিষয় নিয়েই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।’’ মনে করা হচ্ছে ঘটনাটি স্থানীয় ভাবেই সংগঠিত হলেও এর পেছনে জেলা কোচবিহারের দুই শীর্ষনেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই কাজ করছে। দিনহাটা বিধানসভা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই দুই নেতার অধীনস্ত গোষ্ঠীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ কোচবিহার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন সংবাদমাধ্যমকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ঘটনা একটা ঘটেছে কিন্তু সেটা কী তা আমি বলতে পারবনা। খোঁজ খবর নিচ্ছি।”