নিজস্ব সংবাদদাতা: উদ্ধার করার পর দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত খাবার, দেওয়া হয়নি জল। আর তার জেরেই প্রায় ১০০ টিয়া পাখির মৃত্যু হয়েছে এমনই অভিযোগ উঠল শুল্ক বিভাগের বিরুদ্ধে। অভিযোগ খাবার আর জলের অভাবেই চারদিন ধরে ঠাসাঠাসি করে রাখা খাঁচায় থেকে মারা গেছে টিয়া পাখিগুলি। উদ্ধারের পর নিয়ম মাফিক বন্যপ্রাণীদের চিকিৎসা করার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তাও করা হয়নি। স্রেফ অবহেলার জন্যই এতগুলি প্রাণ গেল বলে অভিযোগ করেছেন পশুপ্রেমীর দল।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ জানুয়ারি ভোরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্বরূপনগরের তারালী এলাকায় কর্তব্যরত জওয়ানরা সাতটি খাঁচা ভরতি ১৪০ টি টিয়াপাখি আটক করে। ধরা পড়ে পাচারকারীও। জানা যায়, উদ্ধার হওয়া টিয়াগুলি অধিকাংশই ‘পাঞ্জাব টিয়া’। আন্তর্জাতিক বাজারে এক-একটির দাম ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। এছাড়াও কিছু দেশি চন্দনাও ছিল। পাঞ্জাব-বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে পাখিগুলি বাংলাদেশে পাচার হচ্ছিল বলেই অনুমান।
ঘটনার চারদিন পর এদিকে ধৃত পাচারকারী হাসিবুর সরদারকে সোমবার বসিরহাট আদালতে তোলা হয়। জামিনের আবেদন খারিজ করে আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এতদিন তার মতোই আটক পাখিগুলিও ছিল শুল্কদপ্তরে। আদালত সূত্রে জানা জানা যায়, শুল্কদপ্তরের হেফাজতে থাকাকালীন ১৪০টির মধ্যে ৯৭টি পাখির মৃত্যু হয়েছে। বাকি পাখিগুলিকে চিকিৎসার পর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই ‘মুক্তির’ ভিডিওগ্রাফি করতে হবে বলেও নির্দেশ আদালতের।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সীমান্তে আটক হওয়া বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বিএসএফ শুল্কদপ্তরের হাতে তুলে দেয়। তার পর শুল্ক দপ্তর কমিশনকে জানায় সে কথা। সেখান থেকে ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়ার পর উদ্ধার হওয়া বন্যপ্রাণকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে উদ্ধারের চারদিন পেরলেও পাখিগুলিকে বনদপ্তরের হাতে কেন তুলে দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে ৯৭টি পাখির অকাল মৃত্যুর খবর জানার পরই ক্ষুব্ধ পশুপ্রেমীরা। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, যাঁরা জীবজন্তু, পশুপাখি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা প্রাপ্ত তারা কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন না। তাদের প্রশ্ন, আইন অনুযায়ী পাচারকারী তো উপযুক্ত শাস্তি পাবে। কিন্তু বেঘোরে চলে যাওয়া জলজ্যান্ত ৯৭ টি প্রাণ কি আবার ফিরে আসবে? এনিয়ে যদিও শুল্কদপ্তরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রশ্ন উঠেছে এই গাফলতির জন্য কে বা কারা দায়ী?