নিজস্ব সংবাদদাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের যেন ডেমো দেখল নন্দীগ্রাম, দেখলো বাংলা! সামান্য একটা সমবায় সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে রক্তাক্ত হল নন্দীগ্রামের মাটি। কিছুদিন আগেই বিধানসভার ভোট হয়ে গেল গুজরাট আর হিমাচল প্রদেশে। ভোট হয়ে গেল দিল্লি পুরসভারও। কোথাও জিতেছে বিজেপি কোথাও কংগ্রেস।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/12/Screenshot_20221223-222530_Video-Player.jpg)
কিন্তু কোথাও এক ফোঁটা রক্ত ঝরা দুরের কথা, সঙ্ঘাতের কোনোও খবর আসেনি অথচ পশ্চিম বাংলার নন্দীগ্রামে সামান্য একটা সমবায় সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে শাসক ও বিরোধী পক্ষের চলল লাঠালাঠি, রক্ত ঝরল দুই পক্ষেরই একাধিক সামর্থকের। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার আগে ফের নন্দীগ্রাম বাংলার জন্য নির্বাচনী হিংসার অশনি সংকেত রেখে গেল। গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। শুক্রবার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর প্রক্রিয়ায় পুলিশ পেল একশতে শুন্য।
শুক্রবার নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের খোদামবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেটুরিয়া কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির পরিচলন সমিতি নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল যথেষ্ট কিন্তু তাতেও এড়ানো গেলনা অবাঞ্ছিত রক্তপাত। এই সমবায়ের পরিচালন সমিতির ১২টি আসনের প্রতিটিতেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপির। পরবর্তীকালে বিজেপি তরফে ১ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/12/Screenshot_20221223-222724_WhatsAppBusiness.jpg)
ফলে তৃণমূলের এক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করে। লড়াই ছিল ১১ আসনে। এদিন শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। ভেটুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভেটুরিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দেখা যায় ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে লোক জমায়েত করছে দু’পক্ষই। অথচ দুটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
অভিযোগ এল ভেটুরিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকাতে বিজেপি ভোটারদের থেকে ভোটার স্লিপ ছিনিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বাঁশ লাঠি নিয়ে মুখোমুখি হয়ে যায় শাসকবিরোধী দুই পক্ষই। প্রথমে বচসা, হাতাহাতি। তারপর একে অপরের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল বাঁশ লাঠি নিয়ে। নির্বিচারে একে অপরকে পেটাতে লাগল। এই সংঘর্ষে কারও মাথা ফাটল কারও হাত। দুই দলেরই পাঁচ ছ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে বলে দাবি করছে। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। তারপরে শুরু হয় ভোট গণনা। ভোটের ফলাফল ঘোষনা হতে দেখা যায় ১১ টিতেই জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি শুন্য।
বিরোধী দলনেতার খাসতালুকে এ ভাবে বিজেপিকে হারানোর পর উল্লাসে ফেটে পড়েন তৃণমূল সমর্থেকেরা। বিজেপির একটি ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই বহিরাগত এনে গণনায় কারচুপির চেষ্টার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো নন্দীগ্রামের এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি ১৫০ ভোটে এগিয়েছিল। কিন্তু সমবায় ভোটে জিততে না পারা রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। বিজেপির দাবি, “এই ভোটে পঞ্চায়েত ভোটে কোন প্রভাব পড়বে না। তৃণমূল বহিরাগত নিয়ে এসে ভোটারদের ভয় দেখিয়েছে স্লিপ ছিনিয়ে নিয়েছে। পুলিশের ভূমিকা ছিল দর্শক।”