নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা কলেজের আগে অবধি আর আইআইটি খড়গপুর ফ্লাইওভারের সামনের ডিভাইডারের ওপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হল সমস্ত মৃত গাছ, পরিবর্তে লাগানো হল নতুন গাছের চারা। গত ২৬ মে ‘KGP বাংলা’ তে প্রকাশ হয়েছিল ওই দুই জায়গায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সার দিয়ে পড়ে রয়েছে গাছেদের লাশ! সৌন্দর্যায়নের জন্য লাগানো সেই সব গাছের অধিকাংশই ছিল পাতাবাহার কিংবা ফুলের। কিন্তু গাছ গুলোকে দেখভাল না করায় ডাল পাতা কান্ড শুকিয়ে এখন সব একাকার হয়ে যেন গাছেদের লাশের সারি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
রোদে ঝলসে বিবর্ণ থেকে বিবর্ণতর হতে হতে পুড়ে ছাইয়ের মত গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যাওয়া সেই সব গাছেদের লাশ দেখতে দেখতে বেদনায় কুঁকড়ে যাওয়া পথচারীদের আবেদন ছিল, প্রতিদিন এই জিনিস দেখতে দেখতে যাওয়া আসা করতে হয়। ভালো লাগেনা। খড়গপুর আইআইটির অধ্যাপক থেকে ইন্দা নিউ টাউনের গৃহবধূ সবারই কাতর আবেদন ছিল লাশ গুলি সরিয়ে নিক পৌরসভা। ‘KGP বাংলা’য় সেই খবর পড়ার পরই শোরগোল পড়ে যায় খড়গপুর পুরসভার অন্দরে। জানা গেছে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার দ্রুত ওই গাছ সরিয়ে নিতে বলেন। পাশাপাশি নতুন করে গাছ লাগানোর নির্দেশ দেন।
সম্ভবতঃ তারপরই পুরসভার এক আধিকারিক যোগাযোগ করেন ‘KGP-বাংলা’র সাথে। বিস্তারিত জানতে চান। তারপরই শুরু হয় পুরানো মৃত গাছ গুলি সরিয়ে নিয়ে নতুন গাছ প্রতিস্থাপনের গাছ। পাশাপাশি এও জানা গেছে যে এবার থেকে গাছের ওপর নজরদারি করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পৌরসভার তরফে। প্রতিনিয়ত জল এবং প্রয়োজনের সার যাতে দেওয়া হয় সেদিকেও নজর রাখা হবে। পৌরসভার ওই আধিকারিক ‘KGP বাংলা’কে এই ধরনের খবর প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, শহরের সৌন্দর্য ও নাগরিক স্বাচ্ছন্দের দিকে তাকিয়ে যেন এই ধরনের খবর আরও করা হয়। পুরসভার ওই আধিকারিকের কথায়, ” এতবড় পৌরসভায় হয়ত সমস্ত বিষয় আমাদের দেখা হয়ে ওঠেনা। যদিও এটা উচিৎ নয় কারন প্রতিটি বিষয় দেখার জন্য আলাদা আলাদা ইন্সপেক্টর রয়েছেন। তারপরও যদি কোনও বিষয় আমাদের নজর এড়িয়ে যায় তবে আপনারা তা আমাদের নজরে আনুন। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত তার সমাধান করতে।”
এদিকে মৃত গাছ সরিয়ে নতুন করে গাছ প্রতিস্থাপন করায় খুশি ব্যক্ত করেছেন শহরের নাগরিকরা। এত দ্রুত পৌরসভা মৃত গাছ সরানোর উদ্যোগ নেওয়ায় পুরসভার পাশাপাশি ‘KGP-বাংলা’কেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। আইআইটি খড়গপুর ( IIT Kharagpur) ক্যাম্পাসের বাসিন্দা সুকুমার ঘোষ বলেছেন, ‘আমাদের বিরাট লজ্জা থেকে রেহাই দিয়েছে ‘KGP বাংলা’ নিউজ পোর্টাল। আমাদের আত্মীয় স্বজনরা বাইরে থেকে এসে ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখেই ওই মৃত গাছ গুলি দেখে বলতেন, খড়গপুর কী এতটা হৃদয়হীন শহর! KGP বাংলা খবর না করলে আরও কয়েকমাস হয়ত পড়ে থাকত ওই গাছগুলো।” ইন্দা নিউটাউনের গৃহবধূ রুমা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ” প্রতিদিন ভোরে মর্নিং ওয়াকে গিয়ে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ আর পাতাবাহারের লাশ দেখতে খুব খারাপ লাগত। ধন্যবাদ ‘KGP-বাংলা’ নিউজ ওয়েব পোর্টালকে। তাঁদের খবর প্রকাশের জন্যই ফের সতেজ গাছ দেখতে পাওয়া যাবে।”