![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/01/Screenshot_20220117-234825_PicsArt.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরের উন্নয়নের জন্য মোট ২০টি প্রকল্প বাবদ ১.৩৭কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সাংসদ উন্নয়ন তহবিলব(MP LAD) থেকে কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর সস্তার রাজনীতি করার জন্যই এই প্রকল্পগুলি আটকে রাখা হয়েছে এমনই অভিযোগ তুলে খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরে বড় বড় ব্যানার টাঙিয়েছে বিজেপি। সঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা MKDA জবাব দাও। বলাবাহুল্য MKDA বা মেদিনীপুর খড়গপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে।
এর আগে সাংসদ তহবিলের টাকা আটকে রাখা নিয়ে দিলীপ ঘোষ নিজেই ট্যুইট করেছিলেন এবার মেদিনীপুর, খড়গপুর শহরে ব্যানার ছড়িয়ে পড়ায় রীতিমত ভিন্ন মাত্রা নিয়েছে দুই শহরের রাজনীতি। পুর নির্বাচনের প্রাক্কালে যা জোরালো প্রশ্ন তুলে দিতে চলেছে দুই শহরের নাগরিকদের মধ্যে। দুই শহরে টাঙানো ওই ব্যানারে বিভিন্ন এলাকায় দিলীপ ঘোষের সাংসদ তহবিলের টাকা কীভাবে আটকে রাখা হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে দেওয়া হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মেদিনীপুর শহরের জন্য ৮টি ও খড়গপুর শহরের জন্য ১২টি প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। যার মোট আর্থিকমূল্য ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা।
ওই ব্যানারে দাবি করা হয়েছে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস এবং ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এই ২০টি প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল।বিজেপির দাবি অথচ মাসের পর মাস এমনকি বছর গড়িয়ে গেলেও মানুষ চরম দুরাবস্থার মধ্যে রয়েছেন। MKDA রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই প্রকল্পগুলি আটকে রেখেছে যাতে প্রকল্প রূপায়ন করতে গিয়ে সাংসদের নাম না উল্লেখ করতে হয়। বিজেপির আরও অভিযোগ বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সাড়া না মেলায়, তাঁরা বাধ্য হয়েছেন পোস্টার দিয়ে টাকা আটকে রাখার বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে।
ওই হিসাব অনুযায়ী যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হচ্ছে মেদিনীপুর শহর লাগোয়া ধর্মায় একটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের জন্য 2.5 লক্ষ, তাঁতিগেড়িয়ায় নিকাশি ব্যবস্থার জন্য 7লক্ষ, নরমপুর মৌজা ও তোড়াপাড়ায় নিকাশি ব্যবস্থার জন্য যথাক্রমে 2.20 লক্ষ ও 35 লক্ষ, একটি আইসিডিএস কেন্দ্র সহ বিবিগঞ্জে ২টি সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য 3.69 ও 3.67লক্ষ, মির্জাবাজার ও সেকপুরা এলাকায় পৃথক পৃথক ভাবে পুরুষ ও মহিলাদের সাধারণ শৌচালয় নির্মাণের জন্য 2.5 ও 2.15লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে দিলীপ ঘোষের সাংসদ উন্নয়ন তহবিল থেকে। মোট আটটি প্রকল্প রয়েছে মেদিনীপুর শহর এলাকায়। মেদিনীপুর শহরের এই বকেয়া প্রকল্পের মোট আর্থিক মূল্য 58লক্ষ 71 হাজার টাকা।
অন্যদিকে ওই তালিকা অনুযায়ী খড়গপুর পৌরসভা এলাকার ১২টি প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ হওয়া স্বত্ত্বেও কাজ করা হচ্ছেনা। দেবলপুর এলাকায় ২টি প্রকল্প রয়েছে। একটি সাড়ে 4 লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাবমার্সিবল পাম্প এবং অন্যটি 14লক্ষ টাকার নিকাশি নালা। 12নম্বর ওয়ার্ডে 18লক্ষ 60 হাজার টাকা ব্যয়ে একটি ঢালাই রাস্তা। রবীন্দ্রপল্লী এলাকায় 5 লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ওভারহেড শেড নির্মাণ, টুরিপাড়ায় 3লক্ষ টাকার রাস্তা নির্মান, শিব নগরে 4লক্ষ 25 হাজার টাকার রাস্তা নির্মান, জগন্নাথ মন্দিরে 10লক্ষ টাকার কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, আজাদ বস্তিতে 4লক্ষ 20 হাজার টাকার জলাধার, আরামবাটিতে 4লক্ষ টাকার ঢালাই রাস্তা, খড়গপুর পুরসভার 19 নম্বর, 29নম্বর এবং 26 নম্বর ওয়ার্ডে যথাক্রমে 3.5 লাখ করে প্রথম দুটি এবং 4লক্ষ টাকার কমিউনিটি ল্যাট্রিন বা সাধারণ শৌচাগার নির্মাণ। জানা গেছে খড়গপুর পৌরসভার পড়ে থাকা কাজ গুলির মোট প্রকল্প মূল্য 78 লক্ষ 55হাজার টাকা।
তৃণমূলের কটাক্ষ, পুরভোটের আগে এ নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। যদিও ঘটনা হচ্ছে এই বকেয়া প্রকল্পের তাস খেলেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কিস্তিমাত করার মত উপাদান যথেষ্ট রয়েছে। বিশেষ করে মেদিনীপুর শহরের তোড়াপাড়ায় 35লক্ষ টাকার নিকাশি প্রকল্পটি যে ওই এলাকার আশেপাশের ৪টি ওয়ার্ডকে সুবিধা এনে দিত এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যেমনটা খড়গপুরের দেবলপুরের ১৪ লাখি নিকাশি নালা আশেপাশের ৪টি ওয়ার্ডকে বিপুল সুবিধা দিতে পারত। এবছর বর্ষায় চরম খারাপ অবস্থা হয়েছিল তোড়াপাড়া ও দেবলপুরে। খড়গপুর শহরের ১২নম্বর ওয়ার্ড বা নিমপুরা অংশে সাড়ে ১৮লক্ষ টাকার ঢালাই রাস্তা কিংবা ১০লক্ষ টাকার জগন্নাথ মন্দিরের কমিউনিটি সেন্টার বকেয়া রাখার মাশুল দিতে হতে পারে শাসকদলকে। কারন বিজেপি এসব নিয়েই প্রচারে নামবে এবার।