নিজস্ব সংবাদদাতা: কোথাও পুরানো শত্রুতার জের কোথাও আবার তোলাবাজির উদ্দেশ্যে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে মেদিনীপুর শহরের ২ জায়গায় চলল গুলি। শনিবার যেন শনিই ভর করল মেদিনীপুর শহরের ওপর। গুলি চলল শশ্মান বন্ধু ও ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/08/IMG-20210829-WA0000.jpg)
সৌভাগ্যক্রমে দুটি জায়গার কোনোটিতেই প্রাণনাশের ঘটনা না ঘটলেও বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে গেল মেদিনীপুর শহরের আইন শৃঙ্খলা। যদিও ঘটনার জেরে ১ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে পুলিশ তবুও মাঝে মধ্যেই এই গুলি চলার ঘটনায় ত্রস্ত্র শহরবাসী।
শনিবার প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে রাত আটটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের প্রবেশ মুখ ধর্মাতে। ধর্মার একটি দোকানে মালিকের খোঁজ করে দুষ্কৃতিদের একটি দল। দোকানে মালিক না থাকায় ওই দোকানের সামনে পর পর দুটি উড়ো ফায়ার করে দুস্কৃতিরা। এলাকার সবাইকে ত্রস্ত করে বাইক ছুটিয়ে চলে যায় দুস্কৃতি দলটি।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/08/IMG-20210828-WA0036.jpg)
এর প্রায় আধঘন্টা পরেই দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে মেদিনীপুর শহরের মহাতাব নগরে পদ্মাবতী শ্মশানের প্রবেশের মুখেই। ঠিক ওই সময় একটি মৃতদেহ নিয়ে পদ্মাবতী শ্মশানে প্রবেশ করছিল শ্মশান বন্ধুর দলটি। ঠিক সামনে রাস্তার উপর দুটি বাইক চেপে চারজন এসে হাত তুলে ফিল্মি কায়দায় গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। শ্মশানে মৃত দেহ দাহ করতে আসা এক ব্যক্তিকে টার্গেট করেই গুলি দুষ্কৃতিরা গুলি চালিয়ে ছিল বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দু’টি বাইকে করে ৪ জন শ্মশানঘাটের সামনে। একজনের নাম ধরেই হুমকি দিয়ে বলে যে, ‘তুই কি ভেবেছিস বেঁচে যাবি? কোথায় তুই?’ বলেই বন্দুক তাক করে ওই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে কিন্তু ট্রিগার টেপার আগেই রাস্তার ওপর দ একটি বাস চলে আসে। আর তারই সুযোগ নিয়ে শ্মশানের ঘেরাটোপে ঢুকে যান ওই শশ্মানবন্ধুটি । ঘটনার পর শ্মশানে আসা ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা গেছে, ‘জানিনা আমাকেই বারবার টার্গেট করছে কেন! আমি ওর কি ক্ষতি করেছি?’
এর কিছুক্ষন পরেই ফের খবর আসে যে এবার গুলি চলেছে ধর্মাতে। পদ্মাবতী শ্মশানের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলি চালানোর পরই ওই চার বাইক আরোহী জগন্নাথ মন্দিরের রাস্তা ধরে চলে যায়। মনে করা হচ্ছে এই দলটিই তোলা চেয়ে হামলা চালানোর পরই চলে আসে মাহাতাব নগরে। তারপর পালিয়ে যায় খড়গপুরের দিকে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/08/IMG-20210828-WA0040.jpg)
পুলিশের অনুমান মেদিনীপুরের দুষ্কৃতিদের পাশাপাশি ঘটনায় খড়গপুর যোগ রয়েছে। হতে পারে এই অপারেশনে খড়গপুরের কোনও দুস্কৃতি রয়েছে অথবা খড়গপুর মেদিনীপুর দু’জায়গাতেই অপারেশন চালাতে অভ্যস্থ এমন কোনও দুষ্কৃতির নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, ঘটনার ২ঘন্টার মধ্যেই এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ অপরাধের গোড়ায় পৌঁছাতে চাইছে পুলিশ। এদিকে প্রায় প্রতিবছরই একের পর এক শ্যুটআউটের ঘটনা প্রশ্ন তুলছে মেদিনীপুর শহর কী তাহলে খুনি দুষ্কৃতিদের স্থায়ী কেন্দ্রে পরিণত হল? ধর্মা, পাটনাবাজার, সিপাই বাজার, কোঁতবাজার এলাকায় বারবার এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। গুলি চলেছে বটতলা হর্ষণদীঘি এলাকায়। মৃত্যুও ঘটেছে একাধিক।তবে কী হাবিবপুর গ্যাং বনাম অন্য গ্যাংয়ের গোষ্ঠী লড়াইয়ে ক্রমশ তাতছে শহর?